সুপ্তার বিয়ে হয়ে যাওয়া মানে জীবনকে জীবনের হাতে সঁপে দেয়া! বিসিএস পরীক্ষার খাতায় রাগ করে শিক্ষা ব্যবস্থার সনাতনী মুখ এঁকে গোল্লায় যাওয়া, মাঝরাস্তায় দাঁড়িয়ে ডাবলু বাসটাকে বৃদ্ধাঙুল দেখিয়ে দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে হরতাল কীভাবে করে তা শিখিয়ে দেয়া; যে ছিলো সম্ভবনার খনি, অপসৃত রোদকে ডেকে নিয়ে গিয়ে সে পেটে মারলো, বুকে জাগিয়ে দিলো দামাল নদী আর অসংখ্য কুমির।
তবু-ও জুতোর ফিতে ঠিকই বাঁধা থাকে, চুলে তেল পড়ে আঙুল চলে চিরুনি উঁকুন-রঅ্যাব খেলে যায়।
দুষ্টু রিকশাটা গাবতলীতে বোকা সিএনজিটাকে সাম্প্রদায়িক শিস দিয়ে ত্যক্ত করে দেয়, আমি প্রায় গায়ের সাথে লেগে আসা গাড়িটাকে একটা জন্মসন্দিহান গালি দিয়ে আশপাশের লোকজনকে জানিয়ে দিই গাড়িটা আসলেই বিদেশি মাল।
সুপ্তার স্বামীটা কি চুলে শ্যাম্পু মাখে? কোন কোম্পানীর? তেল দেয় না জেলি মারে? হাসান নামের পৃথিবীর সমস্ত যুবককে আমি চিরদিন মীর জাফর জ্ঞান করে যাবো, পত্রিকায় বুদ্ধিজীবিরা যতোই দেশ উদ্ধার করুক না কেনো। শালা এতো টাকা পেলো কোথায়? সে কি অফিসের ড্রয়ারে, ফাইলের স্তুপে অমানুষের জন্ম দেয়? টেবিলের নিচে অন্যরকম হাত মারে? কিংবা যমুনা সেতুর আয়ুষ্কাল দৃপ্ত পা-নাচানিতে বাড়িয়ে দেয়? অথবা বড়কর্তার কামরার দেয়ালের টাইলস আরো চকচকে তেলোজ্জ্বল হয়ে উঠে? ঢের বিকেলে কবিতা পড়ে মেয়েলি অসুখাক্রান্ত সুপ্তার বিষাদগ্রস্ত মুখের মানচিত্র আমি-ও পাল্টিয়ে দিয়েছিলিম। বাতি নিভালেই সব্বাই নিমকহারাম, হাজার দেখেছি, উদাহরণ পেলাম। সুপ্তার বাবা আমজাদ হোসেনকে কেবল ইশকুল শিক্ষক বলেই নয়, আরো অধিক আত্মীয়তার সংকেত জেনে, সেপ্টেম্বরে যেদিন কার্ফু জারী হলো সেদিন হাওয়াই-শার্ট পরে নগ্ন স্যান্ডেল সম্বল করে বাসায় পৌঁছে দিয়েছিলিম।
দোষ কিছুটা আমারো ছিলো, সম্পর্ক কী তাই তো নির্ধারণ করতে পারলাম না আজো। ভালোবাসা মানেই তো বিয়ে করা নয়, গতশীতে দেয়া শালটা পরশুকাল-ও আলমারি থেকে বের করে দেখেছি। সম্পর্ক হলো যাপনের প্রতিবন্ধীত্ব। সুপ্তা বুঝলো না, বোকা মেয়ে, বোকারা সুখী হয়।
প্যান্টের পকেটে হাত দিয়ে বুঝলাম ম্যানিব্যাগ খোয়া গেছে, আমি কিছু গাছের পাতা ছিঁড়ে নিলাম। শিমুল। শহরে বেশি মানায় কৃষ্ণচূড়া। চোখ বন্ধ করে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলাম,
আকাশে ড্রাগন উড়ছে, এক ফালি বৃষ্টি তবু-ও চোখ ফাঁকি দিয়ে নেমে আসবে, আমার বুকপকেটে চেইন নেই; আমি আবারো হাঁটতে রইলাম, শ্বাশত, আমার ছায়াগুলো কেবল পরিবর্তিত হচ্ছে, আর সময়ের রঙ।
১০/৫/২০১০
ashraf ami Amit Chakravarty.
ReplyDeleteei patatir sondhan pelam hothatoi
ekhon majhe majhe ese ekhane apnar likha pora jabe asha kori...
notun likhagulo eikhane post kore diyen...
shuveccharthe
ধন্যবাদ, কবি অমিত। আমি আসলে নানাকিছু নিয়ে ব্যস্ত। ফিরবোই শীঘ্রই।
ReplyDeleteঅনেকদিন আপনার লেখা পাই না! কী হয়েছে?
ReplyDelete@ ভবঘুরে,
ReplyDeleteবিভিন্ন কারণে ব্যস্ত ছিলাম। ফিরবো শীঘ্রই।
[নামটা জানালে চিনতে সুবিধে হয়]