এসো খড়ে সুঁই খুঁজি

Custom Search

Saturday, January 20, 2018

আত্মহত্যা বিষয়ক কিছু ভ্রান্তি ও এইক্ষেত্রে কিছু করণীয়

এই লেখাটি আত্মহত্যা বিষয়ক। কয়েকদিন আগে কবি রহিমা আফরোজ মুন্নির মেয়ে শিল্পী আফ্রিদা তানজিম আত্মহত্যা করেছেন। তাদের দুজনের কারো সাথে আমার পরিচয় নেই, ছিলো না, কিন্তু আফ্রিদার আত্মহত্যার খবর ফেইসবুকে দেখে বুকটা হাহাকার করে উঠলো, বিশেষত তার আঁকা ছবি দেখে মনে হলো সে অনেক সম্ভাবনাময়ী শিল্পী ছিলো এবং পৃথিবী বিশেষত বাঙলাদেশ একজন ভালো শিল্পী হারালো। আমি ছবি আঁকা শিল্প বুঝি না, যেসব ছবি আমার মনোযোগ ধরে রাখে অনেকক্ষণ তাকিয়ে তাকতে ইচ্ছে হয় সেগুলোই আমার কাছে মহৎ শিল্প, ভালো ছবি। ভ্যান গগ আমার প্রিয় শিল্পী, সূর্যমুখী ফুলের একটি ছবি আছে তার, জীবন্ত সূর্যমুখী মনে হয় দেখে, আমি অনেকক্ষণ চেয়ে থাকি। সেই বিচারে আফ্রিদার ছবি দেখে আমার মনে হচ্ছিলো একেকটি ছবিতে অসংখ্য গল্প, চরিত্র, তাদের আত্মকথা ফুটে উঠেছে; মনে হচ্ছিলো একেকটি ছবি দেখে আমি একেকটি কবিতা লিখতে পারবো। মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী, কিন্তু সেই মৃত্যু আত্মহত্যা হলে আমার মাঝে কেনো জানি অসহ্য অক্ষমতার যন্ত্রণা কাজ করে। আমি নিজে-ও জীবনে আত্মহত্যার কথা ভেবেছি (পরিসংখ্যান মতে প্রতি তিনজন মানুষের একজন জীবনের কোনো না কোনো সময় আত্মহত্যার চিন্তা করে!), কানাডায় আসার প্রথম কয়েক বছর আমি হালকা বিষণ্ন ছিলাম (নিজের বর্তমান মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক জ্ঞান দিয়ে সেইসময় পর্যালোচনা করলে মনে হয়), আমার কোনো বন্ধু ছিলো না, নতুন দেশ নতুন ভাষার পিস্টনে ভেতরে ভেতরে একা; ইংরেজি কয়েকশ শব্দ জানি বটে, বাক্য গঠন হয় না তখনো, ফরাসি তো নাই বলা চলে। এইসব কথা বলার কারণ হচ্ছে যে আত্মহত্যার অন্যতম কারণ হচ্ছে নিঃসঙ্গতা। নিঃসঙ্গতা বিষণ্নতা রোগের-ও অন্যতম কারণ। পরিসংখ্যান মতে যারা আত্মহত্যা করে তাদের ৫০% বিষণ্নতায় ভুগে। আমি আত্মহত্যার চেষ্টা করি নি, চিন্তা করেছি (যারা আত্মহত্যার চেষ্টা করে তাদের মাঝে ৩৩% একবার হলে-ও আত্মহত্যার চেষ্টা করে)। তাই নিজের জীবনের সেই ফেলে আসা সময়ে চোখ রেখে আমি বুঝতে পারি আত্মহত্যার করা মানুষগুলো কী অসহ্য যন্ত্রণা কষ্টের মধ্য দিয়ে যায় যে তারা মনে করে আত্মহত্যাই তাদের জীবনের সর্বোচ্চ সমাধান। হ্যাঁ, তারা আত্মহত্যাকে সমাধান হিসেবে ব্যবহার করে, কিন্তু এই সমাধান সর্বোচ্চ যৌক্তিক সমাধান নয়- এইটুকু বোঝাতে পারলে, উপলব্ধি করাতে পারলে অনেক আত্মহত্যা ঠেকানো সম্ভব।
আত্মহত্যা ও আত্মহত্যাকারীদের সম্পর্কে কিছু মিথ বা বাজেকথা প্রচলিত আছে: ১। "যেসব মানুষ আত্মহত্যার কথা বলে তারা আত্মহত্যা করে না, করবে না।" এটা সবচেয়ে বড় ভুল ধারণা। দেখা যায় যে আত্মহত্যাকারীরা (প্রায় ৭৫%) আত্মহত্যার আগে আভাস দেয়, যেমন মৃত্যু বিষয় কথাবার্তা বেশি বলে, তারা 'না থাকলে' কী হবে সেইসব নিয়ে আলাপ করে, সাহায্যের জন্য (cry for help) চেষ্টা করে-ও পায় না। এইসব আভাস বা লক্ষণ এতো সূক্ষ্ম যে আশপাশের মানুষ বুঝতে পারে না। এমনকি পাক্কা সাইকোলজিস্টদের-ও বেগ পেতে হয়। প্রতিটি সাইকোলজিস্টদের প্রতি ছয়জন রোগী বা ক্লায়েন্টের একজন আত্মহত্যা-প্রবণ হয়ে থাকে। তাই যখন এইসব আভাস আসে তখন কৌতুক, কিংবা সাধারণ আলাপ ভেবে উড়িয়ে দেবেন না; মনে রাখবেন বাঁচতে হলে বুঝতে হবে। ২। "আত্মহত্যার আগে কোনো লক্ষণ প্রকাশ করে না আত্মহত্যাকারীরা।" এটা ভুল ধারণা। অনেক মানুষই কিছু সূক্ষ্ম ও স্থূল লক্ষণ প্রকাশ করে, কিন্তু আশপাশের লোকজন ধরতে পারে না, যেহেতু মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে জ্ঞান কম অথবা লক্ষণ দেখে অভ্যস্ত নয়। যেমন, অনেক আত্মহত্যাকারী বলে যে তারা না থাকলে পৃথিবী (কিংবা পরিবার আত্মীয়স্বজন) ভালো থাকবে ("the world would be better off without me") ধরণের চিন্তা প্রকাশ করে। অনেকে কাছের মানুষদের জন্য অপ্রত্যাশিত ও অব্যাখ্যাতীত উপহার কিনে আনে (যেমন, কোনো উপলক্ষ ছাড়া হঠাৎ দামী উপহার।) ৩। "আত্মহত্যাকারীরা আসলেই মারা যেতে চায়, তাদের ফেরানো যাবে না।" এটা-ও ভুল ধারণা। উপরে যেমন বলেছি, আত্মহত্যাকারীরা যন্ত্রণা, লজ্জা, ঘৃণা সহ্য করতে না পেরে, কোনো বিকল্প উপলব্ধি করতে না পেরে কিংবা বিকল্প উপায় নির্বাহ না করতে পেরেই শেষ সমাধান হিসেবে আত্মহত্যাকে বেছে নেয়। অধিকাংশ আত্মহত্যাকারীই আত্মহত্যার আগে অনেকবার চিন্তা করে, পিছু হটে আসে, তারপর আত্মহত্যা করে বসে; অর্থাৎ আত্মহত্যার ব্যাপারে তারা দ্বিধার্ত থাকে। তাই আপনি যদি সন্দেহ করেন যে আপনার পরিচিত কেউ বিষণ্ন কিংবা আত্মহত্যার কথা ভাবছে তাদের বোঝাতে পারেন, ফেরাতে পারেন; তারা তখন তাদের বুঝতে পারে, তাদের পাশে থাকতে পারে এমন একজনকে চায়। সন্দেহ হলে সাধারণ কয়েকটি প্রশ্ন যেমন "তুমি (আপনি) কি আত্মহত্যার কথা ভাবছো? আত্মহত্যার চেষ্টা করছো?" করতে পারেন। আত্মহত্যা নিয়ে খোলামেলা আলাপ মানে এই না যে এটি মাথায় আত্মহত্যার চিন্তা ঢুকিয়ে দেবে। ৪। "আত্মহত্যার কারণ সহজে নির্ণয়যোগ্য।" আসলেই নয়। আত্মহত্যা জটিল ব্যাপার, এবং অধিকাংশ কেইসে একাধিক কারণ এবং সেইকারণগুলোর মধ্যকার মিথস্ক্রিয়া কাজ করে। যেমন, কেউ একজন দেউলিয়া হয়ে আত্মহত্যা করলেই এর মানে এই না যে লোকটি আর্থিক সমস্যার কারণে আত্মহত্যা করেছে, দেখা যেতে পারে হয়তো সে কোনো মানসিক সমস্যা কিংবা শারীরিক রোগে ভুগছিলো, যার ফলে তার আর্থিক অবস্থা সামাল দিতে পারছিলো না, এবং আত্মহত্যা করেছিলো। ৫। "আত্মহত্যাকারীরা সবাই বিষণ্নতার রোগী।" সব আত্মহত্যাকারীই বিষণ্নতার রোগী নয়। হ্যাঁ, এটা ঠিক যে আত্মহত্যাকারীদের অধিকাংশ বিষণ্নতার রোগী, তবে অন্যান্য মানসিক ডিসঅর্ডার যেমন উদ্বেগ-জনিত (Anxiety), সামাজিক উদ্বেগ (social anxiety, soical phobia), প্যানিক (panic disorder), আসক্তি ইত্যাদি নানা মানসিক সমস্যা আত্মহত্যার দিকে ধাবিত করতে পারে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হচ্ছে যে বিষণ্নতার রোগীরা আত্মহত্যা করলে-ও তারা আত্মহত্যা করে সবচেয়ে বেশি বিষণ্ন থাকাকালীন অবস্থায় নয়, বরং সবচেয়ে বাজে অবস্থা থেকে হালকা উন্নতি হওয়ার সময়ে। ৬। "মুড, আবেগ, ইত্যাদির উন্নতি হলে আত্মহত্যার ঝুঁকি কমবে।" অধিকাংশ মানসিক রোগ বারবার ফিরে আসে, অর্থাৎ replase ঘটে। তাই একবার আবেগ, মানসিক অবস্থার উন্নতি হলে ঝুঁকি কমে যায় না। রিল্যাপ্স ঠেকানোর জন্য কিছু প্রতিরোধ-মূলক ব্যবস্থা নিতে হয়। এইতো গেলো আত্মহত্যা বিষয়ক কিছু মিথ বা বাজে ধারণা। কিন্তু মানুষ আত্মহত্যা করে কেনো? বিষণ্নতার কথা তো আগেই বলেছি। বিষণ্নতা রোগের বিভিন্ন ভাগ আছে। এর মাঝে Major depressive disorder (এক নাগাড়ে অনেকদিন ধরে বিষণ্ন জীবনযাপন করা) আক্রান্তদের প্রায় ১৫% আত্মহত্যা করে। এছাড়া আছে Bipolar disorder (কিছুদিন খুবই বিষণ্ন থাকা, তারপর কিছুদিন আবেগের তুঙ্গে থাকা) আক্রান্তরা বিষণ্ন সময়কালে আত্মহত্যা বেশি করে। সাধারণত ১৩-২৪ বছর বয়েসীরাই বেশি আত্মহত্যা করে, যেহেতু তাদের বয়েস কম, মস্তিস্ক পুরোপুরি বিকশিত হয় নি (মানব মস্তিস্ক পূর্ণ বিকাশের জন্য প্রায় ২৫ বছর লাগে), জীবন সম্পর্কে অভিজ্ঞতা কম, কীভাবে সমস্যা সমাধান করতে হয় সেই সম্পর্কে ধারণা বা স্বচ্ছ জ্ঞান কম, এবং "ঝোঁক-প্রবণ" (বয়সসন্ধিতে হরমোন-জনিত) কারণে। আত্মহত্যাকারীরা ওজন কমা, খাওয়ায় রুচি চলে যাওয়া, ঘুম না হওয়া (ইনসমনিয়া, কিংবা দীর্ঘদিন ধরে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটা, কম ঘুম হওয়া), অস্বাভাবিক বেশি লজ্জা বা দায় অনুভব করা, নিজেকে মূল্যহীন মনে হওয়া, মৃত্যু বিষয়ক ঘনঘন চিন্তা ইত্যাদি লক্ষণ দেখায়। এর মাঝে ঘুম না হওয়া বা ইনসমনিয়া সবচেয়ে বড় ফ্যাক্টর (ঘুম না হওয়া অন্যান্য অনেক মানসিক ও নিউরোডিজেনারিটিভ রোগের অন্যতম কারণ)। শারীরিক সমস্যা-ও মানসিকভাবে বিপর্যন্ত করে আত্মহত্যা-প্রবণ করে তুলতে পারে অনেককে। যেমন, কোনো ব্যথা-জনিত রোগ ইত্যাদিতে আক্রান্ত হয়ে সহ্য না করতে পারা। নারীদেরকে ক্ষেত্রে যেসব মেয়েরা ছোটবেলায় বাবা কিংবা মায়ের কাছ থেকে অবহেলা বা উপেক্ষা পেয়েছে তাদের আত্মহত্যার ঝুঁকি বেশি হয়ে থাকে। এছাড়া Boderline personality disorder নামে একটি মানসিক রোগ আছে। এইরোগের অনেকেই নিজের শরীরের ক্ষতি করা (যেমন হাত, রগ কাটা) ছাড়া-ও আত্মহত্যার চেষ্টা করে। হঠাৎ তীব্র নেতিবাচক আবেগ অনুভব করা এবং ইতিবাচক ও নেতিবাচক আবেগের মধ্যে প্রচুর পার্থক্য থাকলে তা আত্মহত্যার ঝুঁকি বাড়ায়, বিশেষত অপ্রত্যাশিত ঘটনাগুলোর ক্ষেত্রে। মাদকাসক্তি, বিশেষত অ্যালকোহল আসক্তি এবং আর-ও বিশেষ করে অ্যালকোহল আসক্ত পুরুষদের আত্মহত্যার ঝুঁকি বেশি হয়ে থাকে, এবং সেই সাথে বিষণ্নতায় ভুগলে তা ভয়াবহ হয়। সাইকোটিক লক্ষণ আছে (যেমন- মাথার ভেতরে অন্য কারো শব্দ, কথাবার্তা শোনা, হ্যালুসিনেশনে কিংবা ধাঁধায় ভোগা, বাস্তবতা এবং কল্পনার মাঝে তালগোল পাকিয়ে ফেলা- যেমন হয়তো মাঠের মধ্যদিয়ে একটি দানব হেঁটে যাচ্ছে, অথচ বাস্তবে মাঠের মধ্য দিয়ে একজন বড়সড় মানুষ হেঁটে যাচ্ছে) যাদের তাদের-ও আত্মহত্যার ঝুঁকি বেশি হয়ে থাকে। বাঙলাদেশের ক্ষেত্রে ধর্ষণের শিকার-ও হওয়া নারীদের আত্মহত্যার ঝুঁকি বেশি, যেহেতু ধর্ষণদের পরে বাঙলাদেশে ধর্ষককে নয় বরং ধর্ষিতাকে দায়ী করা হয়, সামাজিকভাবে হেয় করা হয় এবং সেই থেকে জন্ম নেয়ে লজ্জা ও অসহায়ত্বের কারণে। এছাড়া, ধর্ষণের পরে সঠিক চিকিৎসা না হওয়া এবং বিচার না পাওয়া প্রভাব ফেলে। নারীরা পুরুষদের চেয়ে বেশি আত্মহত্যার চিন্তা ও চেষ্টা করলে-ও পুরুষরা আত্মহত্যার ক্ষেত্রে বেশি "সফল" হয়, যেহেতু পুরুষরা লিথ্যাল (ভয়ংকর ও কার্যকরী) উপাদান বেশি ব্যবহার করে, যেমন, আগ্নেয়াস্ত্র কিংবা ধাতব ধারালো জিনিস ব্যবহার করা, ব্রিজ থেকে ঝাঁপ দেয়া ইত্যাদি। আত্মহত্যা ঠেকানো উপায় কী? সবচেয়ে বড় উপায় হচ্ছে মানসিক সমস্যা কিংবা ডিসঅর্ডারের চিকিৎসা করা। মনে রাখবেন মানসিক সমস্যার জন্য সাহায্য চাওয়া কিংবা চিকিৎসা করায় লজ্জার কিছু নেই। আপনি ক্যান্সার আক্রান্ত হলে চিকিৎসা নিতে নিশ্চয় লজ্জা বা গ্লানি অনুভব করবেন না, তবে মানসিক স্বাস্থ্যের বেলায় করবেন কেনো? অসুস্থ সমাজের ভয়ে নিজেকে অসুস্থ করে রাখবেন না। মানসিক সমস্যার দ্রুত সমাধান না করলে এটি বাড়তে থাকে এবং বাজে থেকে বাজেতর হয় সময়ের সাথে সাথে। আপনি বিষণ্নতায় ভুগলে অবহেলা করবেন না। মনোবিদদের মাঝে যারা Cognitive-behavioral therapy প্র্যাকটিস করে তারা ভালো, এবং তাদের চিকিৎসা ফলপ্রসূ। ফ্রয়েডিয়ানদের কাছ থেকে দূরে থাকবেন। আত্মহত্যা করার মাধ্যমগুলোর অ্যাক্সেস কমান। যেমন, ঘুমের ওষুধ কিংবা অন্যান্য চেতনানাশক ওষুধ নারীরা আত্মহত্যায় বেশি ব্যবহার করে, এইসব ওষুধ দূরে রাখুন (নিজের ওষুধ নিজের অন্তর্বাসের মতন গোপন রাখায় শ্রেয়), পুরুষদের ক্ষেত্রে আগ্নেয়াস্ত্র কিংবা এইসবের অ্যাক্সেস রোধ করুন। বাঙলাদেশে অনেকে সিলিঙের ফ্যান কিংবা গাছ থেকে ঝুলে আত্মহত্যা করে, এইসবের অ্যাক্সেস কমান বা নজর রাখুন। এইসব প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা। কানাডার ক্যুবেক প্রদেশে ১৯৭০-৮০ দশকে আত্মহত্যার হার বেশি ছিলো অন্যান্য প্রদেশ ও অন্যান্য দেশের তুলনায়, দেখা গেলো যে অনেকে ব্রিজ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে। পরে সেইসব ব্রিজের দুই পাশে মাথা সমান উঁচু বেড়ি দেয়া হলো এবং ব্রিজের দুই পাশ ধরে হাঁটা চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়, এবং আত্মহত্যার হার কমে এসেছিলো। মানসিক রোগ বা সমস্যায় আক্রান্তদের উপর নজর রাখুন, খেয়াল রাখুন, সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। মানসিক ব্যথা ও ভোগার কারণ দূর করুন, চেষ্টা করুন। কারো সাথে আপনার অনুভূতি, ব্যথা ইত্যাদি শেয়ার করুন। আত্মহত্যাকে শেষ সমাধান কিংবা যেকোনো সমাধান না ভাবে অন্যান্য যৌক্তিক বাস্তববাদী সমাধানের চিন্তা করুন। প্রয়োজনে অন্যের সাহায্য নেন, মনে রাখবেন সাহায্য চাইতে লজ্জার কিছু নেই, বরং এটি বুদ্ধিমত্তার পরিচয়, যেহেতু আপনি বুঝতে পারছেন যে আপনার সাহায্য লাগবে এবং সাহায্য ব্যবহার করে সমাধানে পৌঁছতে চেষ্টা করছেন (সমস্যার সমাধান করতে পারা বুদ্ধিমত্তার লক্ষণ)। নিজেকে সময় দিন। আবেগে কিংবা ঝোঁকের মাথায় সিদ্ধান্ত না নিয়ে চিন্তা করুন, নিজের কথা, পরিবারের কথা, প্রয়োজনে প্রকৃতির কথা ভাবুন- প্রকৃতি (আপনার বাবা-মা) বিপুল আয়োজন করে আপনাকে বানিয়েছে, আপনার জীবন অনেক সুন্দর- সাময়িক আঘাত, আবেগে কেনো এই সৌন্দর্যকে উপেক্ষা করবেন? আত্মহত্যার জন্য বিভিন্ন দেশে (বাঙলাদেশ সম্পর্কে আমার ধারণা নেই) সাহায্যকারী প্রতিষ্ঠান ও সেবাকেন্দ্র আছে (hotline), এগুলোর সাহায্য নিন। আমরা আশপাশের লোকজন একজন আত্মহত্যা-প্রবণ ব্যক্তির জন্য gatekeeper হিসেবে কাজ করতে পারি। আফ্রিদা তানজিমকে আমরা ফিরে পাবো না, কিন্তু আরেকজন আফ্রিদা তানজিমের অকাল চলে যাওয়া ঠেকাতে পারি। পারবেন না?

No comments:

Post a Comment

কী নিয়ে মাতামাতি...

13 Reasons Why (1) ADHD (1) Alzheimer's disease (1) Antibiotic Resistance (1) Anxiety (1) Autism (1) Brexit (1) Brief Answers to the Big Questions (10) Britain (1) Bruce Peninsula (1) Cades Cove Scenic Drive (1) Canada (2) Clingsman Dome (1) District 9 (1) Dopamine (1) Dyer's Bay (1) Federico Garcia Lorca (1) Fierté Montréal (2) Gaspé & Percé Rock (1) Global Warming (2) Great Smoky Mountains (2) Heatwave (1) Hemianopia (1) infographics (1) Instagram (104) International Balloon Festival (1) Interstate 77 (1) Lift (1) Links (1) Maple syrup boiling down (1) Maple syrup harvesting (1) Marconi Union (1) Mike Krath (1) Montmorency Falls (2) Montreal International Jazz Festival (1) Montreal Pride Parade (2) Mother Teresa (1) Movies (1) Music (2) Netflix (1) Niagara Falls (3) Nickelback (1) Nirvana (1) North Carolina (1) nutella (1) Photography (2) Photos (104) Poets of the Fall (2) Psychology (1) Rain storm in Montreal (1) Rape (1) Reading List (1) Saint-Remi (1) Samuel de Champlain Bridge (1) Sandra Crook (1) Schizophrenia (1) Sci-Fi (1) Sci-Hub (1) Shortest Sci-Fi (1) Smoky Mountains (1) Stephen Hawking (15) Sunshine 2007 (1) Tennessee (1) The Beatles (1) The Danish Girl (1) The Grand Design (8) The Handsome Family (1) Tobermory (1) Toronto (2) Transexualism (1) True Detective (1) Tyrannosaurus rex (1) Wallingford Back Mine – Mulgrave et Derry (1) West Island (1) Womenchapter (1) অটিজম (3) অটোয়া (1) অণুগল্প (7) অনুবাদ (17) অভিগীতি (12) অভিলিপি (9) অর্থনীতি (2) অ্যালকোহল (1) আইন ও বিচারব্যবস্থা (1) আইসিস (2) আচরণগত স্নায়ুবিজ্ঞান (1) আত্মহত্যা (2) আলঝেইমারের রোগ (3) আলোকচিত্র (6) আলোকবাজি (9) ইচ্ছেকথা (3) ইন্সটাগ্রাম (104) উইমেন-চ্যাপ্টার (1) উদ্বেগ (1) উবার (1) একুশে বইমেলা (1) এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধ (1) এম-তত্ত্ব (5) কবিতা (95) কম্পিউটার বিজ্ঞান (1) করোনাভাইরাস (6) কলাম (5) কানাডা (4) কাব্যালোচনা (2) কাসেম বিন আবুবাকার (1) কিশোরতোষ (1) কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (1) কৃষ্ণগহ্বর (1) কোভিড-১৯ (8) ক্যান্সার (1) ক্রসফায়ার (1) ক্লোনিং (1) খাদ্যব্যবস্থা (1) গণতন্ত্র (1) গবেষণা (1) গবেষণাপত্র (1) গর্ভপাত (1) গল্প (8) গাঁজা (1) গান (17) গুজব (1) গ্যাব্রিয়েলা মিস্ট্রাল (1) চলচ্চিত্র (4) ছড়া (5) ছবি (104) ছোটগল্প (5) জঙ্গিবাদ (1) জনস্বাস্থ্য (2) জিকা ভাইরাস (1) জীববিজ্ঞান (1) জীবাণু (1) ট্রান্সসেক্সুয়াল (1) ট্রান্সসেক্সুয়ালিজম (1) ডাইনোসর (1) ডাউনলোড (1) ডোপামিন (1) তাপমাত্রা (1) তিল-গপ্পো (17) তুষার দত্ত (2) তেজস্ক্রিয়তা চিকিৎসা (1) দূরবীন (2) দৃষ্টিশক্তি (1) ধর্ম (3) ধর্ষণ (2) নায়াগ্রা ফলস জলপ্রপাত (1) নারী (3) নারী স্বাধীনতা (1) নুটেলা (1) নৈতিকতা (1) পরিবেশ (1) পাঁচমিশালী (1) পাঠসূচি (1) পাম তেল (1) পাহাড় (1) পুস্তক (1) পেডোফিলিয়া (1) প্রকৃতি (1) প্রবন্ধ (2) প্রবাস (2) প্রাইমেট (1) ফটোগ্রাফী (1) ফেসবুক (1) ফ্রান্স (1) বই (2) বড় প্রশ্নের সংক্ষিপ্ত উত্তর (10) বয়ঃসন্ধি (1) বর্ণবাদ (1) বাঙলাদেশ (18) বাবা (1) বাংলাদেশ (1) বিজ্ঞপ্তি (1) বিজ্ঞান (13) বিটলস (1) বিষণ্নতা (3) বুরকিনি (1) বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি (7) বৈশ্বিক উষ্ণতা (1) ব্যক্তিত্ব (1) ব্যথা (1) ভাইটামিন ডি (1) ভাইরাস (1) ভালোবাসা (1) ভুয়া খবর (1) ভেন্টিলেটর (1) ভ্রমণ (3) মনস্তত্ত্ব (1) মনোবিজ্ঞান (19) মন্ট্রিয়াল (1) মন্ট্রিয়াল আন্তর্জাতিক জ্যাজ উৎসব (2) মস্তিষ্ক ক্যান্সার (1) মহিমান্বিত নকশা (3) মাদক (1) মাদকাসত্তি (2) মাদার তেরেসা (1) মানসিক স্বাস্থ্য (5) মুক্তগদ্য (3) মুক্তচিন্তা (3) মুক্তিযুদ্ধ (3) মৌলবাদ (1) যাপিত জীবন (2) যুগান্তর পত্রিকা (1) যৌনতা (1) রাজনীতি (1) রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প (3) রূপান্তরকাম (1) রৌদ্রস্নান (1) লিওনার্ড ম্লোডিনো (5) লিংক (2) লিঙ্গরূপান্তর (1) লিঙ্গরূপান্তরকারী (1) লিথিয়াম (1) লিফট (1) শিক্ষাব্যবস্থা (1) শিশুতোষ (3) সংগীত (3) সন্ত্রাসবাদ (1) সংবাদমাধ্যম (1) সময়ভ্রমণ (1) সমালোচনা (1) সর্দিগর্মি (1) সানশাইন (1) সামাজিক দূরত্ব (1) সাম্প্রতিক দেখা চলচ্চিত্র (1) সার্স-কোভ-২ ভাইরাস (4) সাহিত্য (4) স্কিৎসোফ্রেনিয়া (1) স্টিফেন হকিং (16) স্ট্রোক (1) স্নায়ুবিজ্ঞান (12) স্নায়ুবিষ (1) স্বাস্থ্যসেবা (1) হলুদ (1)
রোদের অসুখ © 2008 Por *Templates para Você*