==============================
রাখি, কাঁচি দিয়ে ঘাসঘুম কাটার শব্দ শুনেছ? ঠিক শব্দ না- মিহি সুর; সেই সুর শুনে শুনে একটি বালক প্রাপ্তবয়ষ্ক হয়ে যায়। বালকের চোখে চার প্রকারের নারীরূপই ধরা দেয়- জননী, সহোদরা, বউ এবং ব্যাজ্ঞনসখা।
তুমি ব্যজ্ঞনসখা।
পা থেকে শুরু করব? নাকি চুলের গোপন থেকে? অন্ধকারের সুতো সব কুন্তলরাশি- আমি জানি; সেই থেইলিজ থেকে শুরু করে সব মানুষ অন্ধকার খুঁড়ে আসছে- আলোর রসালয়ের খোঁজে; আমি-ও খুঁড়তে ভালবাসি, তাই তোমার চুলঝাঁক দিয়ে হাতখড়ি শুরু করি। এই চুলটা এসেছে আমার বুকের লোমশহর থেকে, তোমার শারীরিক পুষ্টির বদৌলতে এত বিরাট হয়ে গেছে! বাঁ পাশের ওই চুলটা লোভী- ড্যাব ড্যাব করে আমার অন্ধকার খোঁড়া পর্যবেক্ষণ করছে।
তোমার দু'টি আপেল ঢেকে রাখ, আমি জোর করে উম্মুক্ত করতে চাইলে-ও দিবে না। দিলে আমার সমুদ্দুরে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না! স্তনবৃন্তে দুটি বেলীফুলের শয্যা- কেবলমাত্তুর দু 'টি বেলীফুল। তারা ভিতরের রসনদীর দয়ায় বেঁচে থাকে। তোমার বক্ষের নদীকে পান করলে-ও আমার তৃষ্ণা মিটবে না- আমার গলায়-জিহবা-ঠোঁটে সোমালিয়ার পানিশূন্যতা। আমাকে পান করতে দাও।
আমি ছুঁয়ে দিলাম আপেলদ্বয়। আদম-হাওয়া পাশ ফিরে তাকায়। আমি জানি ওরা কেবল বিবর্তনের শিকার, তবু-ও আজ তোমার মহুয়ার জন্য সমস্ত কিতাব মিথ্যে জানব। আপেল দুটি গোলাপী রঙা, মাঝে মাঝে সাদাসাদা লোমগন্ধ।
কপালের ভাঁজগুলোর ভিতরে ভিতরে রেলট্র্যাক। রাখি, আমার কোন বাইসাইকেল ছিল না, চালাতে-ও পারি না। আমি রেলের চালক হয়ে যাব- ব্যস্ততা নিয়ে ছুটে যাব এপাশ-ওপাশ। একটা গোলাপ অভিমানে বয়োবৃদ্ধা হলে ক্ষতি নেই।
সেই আমাদের বাড়িটা ছিল খড়ের, যখন নাগরিক ও ধনতন্ত্রের সংজ্ঞা আমরা জানতাম না। খড়ের ছাদ প্রায় বাতাসের প্রেমে আকুল হয়ে ডানা মেলত, আমাদের গহীন ঘরে সমুদ্দুর ঝাঁপি দিত অবলীলাক্রমে। গুঁটি নামে আমাদের যে বিড়াল ছিল সেটা একদিন অভিমানে মরে গেল; সমস্ত বর্ষা যখন হাড্ডুডু খেলছিল সমগ্র উঠোনে-গাছে-চোখে তখন গুঁটির একটু জায়গা ছিল না শুকনো দাঁড়ানোর। তিন তিনটি পিচ্চি বিড়াল নিয়ে সে ভেসে যায়। আমি নর্দমার কিনারায় আবিষ্কার করেছিলাম, একটু-ও কাঁদি নি, কসম একটু কাঁদি নি; বোবাস্বরে ঈশ্বরকে বকে দিয়েছিলাম। বর্ষা অনেক কিছু ধুয়ে দেয়। রাখি, আমাকে চোখে বর্ষা দিও না, কেবল একলা ফোঁটার নির্ঝর দাও; আমি বিনিময়ে জলের সমাহার দেখিয়ে দিব।
পেয়ারাপাতায় লুকিয়ে ফেলেছি গোপন অভিমান,
আজ তাই সূর্যের তেজ কম;
চাঁদের মালা আগলে দিলাম ছায়াপথের গাহনে!
শান্তিবাদী লিখিলের চোখে নিরাকারাকার-সুপ্তি।
রাখি, আমি তোমার বগলের গুহায় যাব না; সেই প্লেটো গুহা-উত্তীর্ণ হয়ে আমাকে আলোর শামুক কুড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। আমি বরং পিজ্ঞরের আয়তন মাপি- প্রজন্মান্তর জানবে চিকিৎসাশাস্ত্র কাকে বলে!
সোনালু যৌবনবতী হলে হলদে হলদে হয়ে যায়, সোনালুর ফুলের নাকফুল দিলাম যত্নে- কেবল আঁখের মাংশের মতো হাত দুখানি লিখে দাও আমায়, উইল করে স্থাবর করে দাও। চেরীফুলের টেউ যখন বৃক্ষকে নগ্ন করে বাতাসের কোমরবন্ধন ধরে ঝাঁপ দেয় তখন একটি দূরবর্তী নদী খুশি হয়ে জল উগলে দেয় পাশ্ববর্তী মাঠে- কৃষাণ ধান বোনার আনন্দে ঈশ্বরকে আরো বিস্তত্ব করে তোলে। তুমি এসব জেনে রাখ। একদিন শুভালক্ষ্মীর ধারে আমি হাঁটব না; ওই মাঠের বক্ষে আমাকে পুঁতে দিও- আমি কবরে গিয়ে পিঁপড়েদের তোমার শরীরের প্রকরণের গল্প শোনাব- ওরা লোভে পড়ে স্বর্গ ছেড়ে মাটিতে আসার প্রেরণা পাবে। আমরা যেমন বেহেশতের বাতাস খাই না, তেমনি স্বর্গের পাখিরাও কোনদিন শুভালক্ষ্মীর জল পান করে নি! সব শুধু মাত্রায় বন্ধী!
রাখি, জোনাকফুলের মতো চোখ নিয়ে তাকিয়ে-ও না। চক্ষু দু'টি আমার গহীনে অঙ্কার জ্বেলে দেয়, আমি পুড়ি; পুড়ে পুড়ে মাঝিপাড়ার শশ্মান হয়ে যাই। ওই চোখে আমি কঙ্গোর বন রোপন করে দিব, তোমায় আর আমাজনে সিনান করতে হবে না।
আমরা কোন প্রমোশনের লোভ করি নি, তদাপি করাতিয়া আগ্রহ;
প্রত্যয়ের পাঁক লেগে কেবল হয়ে যায় দীর্ঘ। যদি-ও কথা ছিল না।
ক্ষেতের ধানচুল আগ্রহ জাগায়।
রাখি, আমি অনেক অভাগা।
আমার বাবা ছোটবেলায় কোন পুতুল কিনে দেয় নি! তিনি আমার জন্য একটি বই কিনে আনলেন। "আরব্যরজনীর মজার গল্প" নামে ছোটদের সংস্করণ। এসব গল্পে অলৌকিক থাকে, তিনি বইটি দিয়ে বল্লেন, "এটা মজার জন্য শুধু না, এখানে গোপন আছে।" আমার নিউরনে গেঁথে গেল। সেই থেকে আমি গোপন খুঁজি- বইয়ের অক্ষরগুলোকে আমাকে গোলকধাঁধায় বিচরণ করায়, আমি হাঁটি, কেবল হাঁটি- আর আজলা ভরে গোপন খুঁজি, কোষ ভরে তুলে নিতে চাই। আমি পারি নি, অকৃতকার্যতা আমাকে কবেই ঘিরে ফেলেছে। তাই বাবার সামনে মুখ তুলে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে বলি নি, "বাবা, আমি অনেক গোপন খুঁজে পেয়েছি, এই দেখ- এইবার কেবল তোমার বুকের গোপন খুঁড়তে দাও।" বাবা বাণিজ্যের ছবি আঁকেন, আমি বাতাসের মুখ। রাখি, আমাকে গোপন দেখাও, আমি তোমাকে গুহার গল্প কইব।
রাখি, ভালো ছিলাম না বলে কালরাতে ঠাঁই নিয়েছিলাম এই শাঙনশরণে- তোমার নাভিঘামের শহরে।
একটা লাল বিড়াল ঘরে ফিরে যায়।
বাহুরাশি বলিষ্ঠ করার ডাক আসে, ডাক আসে প্রযত্নের। সেই শহর এতো হাওয়ার বগলাধিকারী কেন! বাতাসের কলহ কী তোমার সোনাচন্দ্রসখা? যাও, এই শহর পাহারা দেয়ার দায়িত্ব আমি দিয়েদিলাম কৃষ্ণচূড়ার পিঁপড়ে সৈনিকদলকে, এরা বারমাসি- বসন্ত-গ্রীষ্মের কাছে টেন্ডার হারালে-ও ঝরে পড়বে না।
তুমি প্রসাদ পেয়ে গেলে, এবার আমাকে পূজো কর; অমর কর; সব দেবতাকে অমর করেছে নারীদল, সব দেবীকে করেছে শিশ্নবাজ বণিকেরা! আমাকে ভিক্ষে দাও অর্ঘ্যডালা, আমার দেহ বাইশ আলোকবর্ষ ধরে রেড়ীর তেলে জ্বলছে- বিদ্যাসাগর-ও এতো রেড়ীর তেলে রাত্রিপাঠ করে নি! তুমি বিশ্বাস কর আমার দেহাগ্নি প্রসারিত হতে হতে কুড়াতে পারে সুন্দরবন ও তৎসংলগ্ন! রাখি, তুমি বাংলাদেশ ভালবাস, আমি জানি। পহেলা বৈশাখে তুমি শাড়ির পাড় হয়ে যাও রমনার শামিয়ানা ঢেকে দিবে বলে- আমি জেনে গেছি। এই বাংলাদেশ বাঁচাতে চাইলে তুমি দুটিপাতাএকটিনদীর পথ উমুক্ত করে দাও, আমি সন্তরণে চলে যাব প্রমত্ত অঙ্গরে।
রাখি রাখি রাখি রাখি রাখি রাখি রাখি
বাতাসে শরীর কাটছে, অসহ্য জ্বর
সিংহেরা সব চরছে কুয়াশার প্রান্তর
আমি ঝাঁপি দিব শীমের কোরকপাখি
তো'র এই পা দুখানি কী অসীমকাল চেরীফুলের বৈঠকে পায়চারী করেছে? এতো শুভ্রতা ধরলে তো বকের ঝাঁক আত্মাহুতি দিবে কুতূহলে- তুমি কি খাদ্যচক্র ভাঙতে চাও? আমি চুষে চুষে আমার গোলাপী ঠোঁট-জিহবা- লেপ্টে দিব তোমার জঙ্ঘা থেকে পায়ের কোমল পর্যন্ত; বাতাসের আরশের কসম।
মিথ্যের নদী শুকিয়ে গেলে একটা দাগ পড়ে থাকে - সত্য। এই দাগ দিয়ে গেছে এক কুম্ভার, তার বালিহাঁসের বুকের মতো নরম হাত ছিল। তোমার কাঁখের এই সজীবতা ওই কামার গড়ে গেছে। তোকে আমি শুদ্ধ করে দিব, তুই আমাকে। মানুষকে ঈশ্বর কবেই ধর্ষণ করে দিয়েছে!
হাড়ের কম্বু ছুঁয়ে গেছে উজান ধাক্কার
যবের কটিরঙ গোপন
আমার এ্যালভিওলাস চুষে চুষে পসার
করে দাও বিশ্বাসের অন্দরশরণ
শালা, চেঙ্গিস পুরো মূর্খ ছিল। কনকিউবাইন পল্লী বানালে অমর হওয়া যায় না, অমর হতে হয় পুস্তকে-অক্ষরে। তাই পৃথিবীর আদি চোরটা ছিল একজন কবি- আন্ধার চুরি করত, লাললাল খেয়ে সাবালক হয়ে গিয়েছিল। দোষ দিয়ে লাভ নেই, ওরা খাদ্যসংস্থানবিদ্যা জানত না।
রাখি, আজ আসার পথে আবছায়া অন্ধকারালোয় একটা বিড়াল দেখেছি, বিড়ালের খোলস। বিড়ালটার হয়ত মানুষের মতন নাক-মুখ-গলা-পেট সবই ছিল, সে বিষয়ে বেশি আগ্রহ দেই নি! কেবল সাদাকালো ত্বকে দেখেছিলাম সময়মেয়- সাদা ও কালো।
======================================
মূল রচনাকাল: ২০০৮ এর মধ্যভাগ। পরিমার্জিত।
রাখি, কাঁচি দিয়ে ঘাসঘুম কাটার শব্দ শুনেছ? ঠিক শব্দ না- মিহি সুর; সেই সুর শুনে শুনে একটি বালক প্রাপ্তবয়ষ্ক হয়ে যায়। বালকের চোখে চার প্রকারের নারীরূপই ধরা দেয়- জননী, সহোদরা, বউ এবং ব্যাজ্ঞনসখা।
তুমি ব্যজ্ঞনসখা।
পা থেকে শুরু করব? নাকি চুলের গোপন থেকে? অন্ধকারের সুতো সব কুন্তলরাশি- আমি জানি; সেই থেইলিজ থেকে শুরু করে সব মানুষ অন্ধকার খুঁড়ে আসছে- আলোর রসালয়ের খোঁজে; আমি-ও খুঁড়তে ভালবাসি, তাই তোমার চুলঝাঁক দিয়ে হাতখড়ি শুরু করি। এই চুলটা এসেছে আমার বুকের লোমশহর থেকে, তোমার শারীরিক পুষ্টির বদৌলতে এত বিরাট হয়ে গেছে! বাঁ পাশের ওই চুলটা লোভী- ড্যাব ড্যাব করে আমার অন্ধকার খোঁড়া পর্যবেক্ষণ করছে।
তোমার দু'টি আপেল ঢেকে রাখ, আমি জোর করে উম্মুক্ত করতে চাইলে-ও দিবে না। দিলে আমার সমুদ্দুরে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না! স্তনবৃন্তে দুটি বেলীফুলের শয্যা- কেবলমাত্তুর দু 'টি বেলীফুল। তারা ভিতরের রসনদীর দয়ায় বেঁচে থাকে। তোমার বক্ষের নদীকে পান করলে-ও আমার তৃষ্ণা মিটবে না- আমার গলায়-জিহবা-ঠোঁটে সোমালিয়ার পানিশূন্যতা। আমাকে পান করতে দাও।
আমি ছুঁয়ে দিলাম আপেলদ্বয়। আদম-হাওয়া পাশ ফিরে তাকায়। আমি জানি ওরা কেবল বিবর্তনের শিকার, তবু-ও আজ তোমার মহুয়ার জন্য সমস্ত কিতাব মিথ্যে জানব। আপেল দুটি গোলাপী রঙা, মাঝে মাঝে সাদাসাদা লোমগন্ধ।
কপালের ভাঁজগুলোর ভিতরে ভিতরে রেলট্র্যাক। রাখি, আমার কোন বাইসাইকেল ছিল না, চালাতে-ও পারি না। আমি রেলের চালক হয়ে যাব- ব্যস্ততা নিয়ে ছুটে যাব এপাশ-ওপাশ। একটা গোলাপ অভিমানে বয়োবৃদ্ধা হলে ক্ষতি নেই।
সেই আমাদের বাড়িটা ছিল খড়ের, যখন নাগরিক ও ধনতন্ত্রের সংজ্ঞা আমরা জানতাম না। খড়ের ছাদ প্রায় বাতাসের প্রেমে আকুল হয়ে ডানা মেলত, আমাদের গহীন ঘরে সমুদ্দুর ঝাঁপি দিত অবলীলাক্রমে। গুঁটি নামে আমাদের যে বিড়াল ছিল সেটা একদিন অভিমানে মরে গেল; সমস্ত বর্ষা যখন হাড্ডুডু খেলছিল সমগ্র উঠোনে-গাছে-চোখে তখন গুঁটির একটু জায়গা ছিল না শুকনো দাঁড়ানোর। তিন তিনটি পিচ্চি বিড়াল নিয়ে সে ভেসে যায়। আমি নর্দমার কিনারায় আবিষ্কার করেছিলাম, একটু-ও কাঁদি নি, কসম একটু কাঁদি নি; বোবাস্বরে ঈশ্বরকে বকে দিয়েছিলাম। বর্ষা অনেক কিছু ধুয়ে দেয়। রাখি, আমাকে চোখে বর্ষা দিও না, কেবল একলা ফোঁটার নির্ঝর দাও; আমি বিনিময়ে জলের সমাহার দেখিয়ে দিব।
পেয়ারাপাতায় লুকিয়ে ফেলেছি গোপন অভিমান,
আজ তাই সূর্যের তেজ কম;
চাঁদের মালা আগলে দিলাম ছায়াপথের গাহনে!
শান্তিবাদী লিখিলের চোখে নিরাকারাকার-সুপ্তি।
রাখি, আমি তোমার বগলের গুহায় যাব না; সেই প্লেটো গুহা-উত্তীর্ণ হয়ে আমাকে আলোর শামুক কুড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। আমি বরং পিজ্ঞরের আয়তন মাপি- প্রজন্মান্তর জানবে চিকিৎসাশাস্ত্র কাকে বলে!
সোনালু যৌবনবতী হলে হলদে হলদে হয়ে যায়, সোনালুর ফুলের নাকফুল দিলাম যত্নে- কেবল আঁখের মাংশের মতো হাত দুখানি লিখে দাও আমায়, উইল করে স্থাবর করে দাও। চেরীফুলের টেউ যখন বৃক্ষকে নগ্ন করে বাতাসের কোমরবন্ধন ধরে ঝাঁপ দেয় তখন একটি দূরবর্তী নদী খুশি হয়ে জল উগলে দেয় পাশ্ববর্তী মাঠে- কৃষাণ ধান বোনার আনন্দে ঈশ্বরকে আরো বিস্তত্ব করে তোলে। তুমি এসব জেনে রাখ। একদিন শুভালক্ষ্মীর ধারে আমি হাঁটব না; ওই মাঠের বক্ষে আমাকে পুঁতে দিও- আমি কবরে গিয়ে পিঁপড়েদের তোমার শরীরের প্রকরণের গল্প শোনাব- ওরা লোভে পড়ে স্বর্গ ছেড়ে মাটিতে আসার প্রেরণা পাবে। আমরা যেমন বেহেশতের বাতাস খাই না, তেমনি স্বর্গের পাখিরাও কোনদিন শুভালক্ষ্মীর জল পান করে নি! সব শুধু মাত্রায় বন্ধী!
রাখি, জোনাকফুলের মতো চোখ নিয়ে তাকিয়ে-ও না। চক্ষু দু'টি আমার গহীনে অঙ্কার জ্বেলে দেয়, আমি পুড়ি; পুড়ে পুড়ে মাঝিপাড়ার শশ্মান হয়ে যাই। ওই চোখে আমি কঙ্গোর বন রোপন করে দিব, তোমায় আর আমাজনে সিনান করতে হবে না।
আমরা কোন প্রমোশনের লোভ করি নি, তদাপি করাতিয়া আগ্রহ;
প্রত্যয়ের পাঁক লেগে কেবল হয়ে যায় দীর্ঘ। যদি-ও কথা ছিল না।
ক্ষেতের ধানচুল আগ্রহ জাগায়।
রাখি, আমি অনেক অভাগা।
আমার বাবা ছোটবেলায় কোন পুতুল কিনে দেয় নি! তিনি আমার জন্য একটি বই কিনে আনলেন। "আরব্যরজনীর মজার গল্প" নামে ছোটদের সংস্করণ। এসব গল্পে অলৌকিক থাকে, তিনি বইটি দিয়ে বল্লেন, "এটা মজার জন্য শুধু না, এখানে গোপন আছে।" আমার নিউরনে গেঁথে গেল। সেই থেকে আমি গোপন খুঁজি- বইয়ের অক্ষরগুলোকে আমাকে গোলকধাঁধায় বিচরণ করায়, আমি হাঁটি, কেবল হাঁটি- আর আজলা ভরে গোপন খুঁজি, কোষ ভরে তুলে নিতে চাই। আমি পারি নি, অকৃতকার্যতা আমাকে কবেই ঘিরে ফেলেছে। তাই বাবার সামনে মুখ তুলে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে বলি নি, "বাবা, আমি অনেক গোপন খুঁজে পেয়েছি, এই দেখ- এইবার কেবল তোমার বুকের গোপন খুঁড়তে দাও।" বাবা বাণিজ্যের ছবি আঁকেন, আমি বাতাসের মুখ। রাখি, আমাকে গোপন দেখাও, আমি তোমাকে গুহার গল্প কইব।
রাখি, ভালো ছিলাম না বলে কালরাতে ঠাঁই নিয়েছিলাম এই শাঙনশরণে- তোমার নাভিঘামের শহরে।
একটা লাল বিড়াল ঘরে ফিরে যায়।
বাহুরাশি বলিষ্ঠ করার ডাক আসে, ডাক আসে প্রযত্নের। সেই শহর এতো হাওয়ার বগলাধিকারী কেন! বাতাসের কলহ কী তোমার সোনাচন্দ্রসখা? যাও, এই শহর পাহারা দেয়ার দায়িত্ব আমি দিয়েদিলাম কৃষ্ণচূড়ার পিঁপড়ে সৈনিকদলকে, এরা বারমাসি- বসন্ত-গ্রীষ্মের কাছে টেন্ডার হারালে-ও ঝরে পড়বে না।
তুমি প্রসাদ পেয়ে গেলে, এবার আমাকে পূজো কর; অমর কর; সব দেবতাকে অমর করেছে নারীদল, সব দেবীকে করেছে শিশ্নবাজ বণিকেরা! আমাকে ভিক্ষে দাও অর্ঘ্যডালা, আমার দেহ বাইশ আলোকবর্ষ ধরে রেড়ীর তেলে জ্বলছে- বিদ্যাসাগর-ও এতো রেড়ীর তেলে রাত্রিপাঠ করে নি! তুমি বিশ্বাস কর আমার দেহাগ্নি প্রসারিত হতে হতে কুড়াতে পারে সুন্দরবন ও তৎসংলগ্ন! রাখি, তুমি বাংলাদেশ ভালবাস, আমি জানি। পহেলা বৈশাখে তুমি শাড়ির পাড় হয়ে যাও রমনার শামিয়ানা ঢেকে দিবে বলে- আমি জেনে গেছি। এই বাংলাদেশ বাঁচাতে চাইলে তুমি দুটিপাতাএকটিনদীর পথ উমুক্ত করে দাও, আমি সন্তরণে চলে যাব প্রমত্ত অঙ্গরে।
রাখি রাখি রাখি রাখি রাখি রাখি রাখি
বাতাসে শরীর কাটছে, অসহ্য জ্বর
সিংহেরা সব চরছে কুয়াশার প্রান্তর
আমি ঝাঁপি দিব শীমের কোরকপাখি
তো'র এই পা দুখানি কী অসীমকাল চেরীফুলের বৈঠকে পায়চারী করেছে? এতো শুভ্রতা ধরলে তো বকের ঝাঁক আত্মাহুতি দিবে কুতূহলে- তুমি কি খাদ্যচক্র ভাঙতে চাও? আমি চুষে চুষে আমার গোলাপী ঠোঁট-জিহবা- লেপ্টে দিব তোমার জঙ্ঘা থেকে পায়ের কোমল পর্যন্ত; বাতাসের আরশের কসম।
মিথ্যের নদী শুকিয়ে গেলে একটা দাগ পড়ে থাকে - সত্য। এই দাগ দিয়ে গেছে এক কুম্ভার, তার বালিহাঁসের বুকের মতো নরম হাত ছিল। তোমার কাঁখের এই সজীবতা ওই কামার গড়ে গেছে। তোকে আমি শুদ্ধ করে দিব, তুই আমাকে। মানুষকে ঈশ্বর কবেই ধর্ষণ করে দিয়েছে!
হাড়ের কম্বু ছুঁয়ে গেছে উজান ধাক্কার
যবের কটিরঙ গোপন
আমার এ্যালভিওলাস চুষে চুষে পসার
করে দাও বিশ্বাসের অন্দরশরণ
শালা, চেঙ্গিস পুরো মূর্খ ছিল। কনকিউবাইন পল্লী বানালে অমর হওয়া যায় না, অমর হতে হয় পুস্তকে-অক্ষরে। তাই পৃথিবীর আদি চোরটা ছিল একজন কবি- আন্ধার চুরি করত, লাললাল খেয়ে সাবালক হয়ে গিয়েছিল। দোষ দিয়ে লাভ নেই, ওরা খাদ্যসংস্থানবিদ্যা জানত না।
রাখি, আজ আসার পথে আবছায়া অন্ধকারালোয় একটা বিড়াল দেখেছি, বিড়ালের খোলস। বিড়ালটার হয়ত মানুষের মতন নাক-মুখ-গলা-পেট সবই ছিল, সে বিষয়ে বেশি আগ্রহ দেই নি! কেবল সাদাকালো ত্বকে দেখেছিলাম সময়মেয়- সাদা ও কালো।
======================================
মূল রচনাকাল: ২০০৮ এর মধ্যভাগ। পরিমার্জিত।
No comments:
Post a Comment