এসো খড়ে সুঁই খুঁজি

Custom Search

Wednesday, June 12, 2019

অধ্যায় ৩: মহাবিশ্বে অন্য কোনো বুদ্ধিমান প্রাণ আছে? [স্টিফেন হকিং: বড় প্রশ্নের সংক্ষিপ্ত উত্তর] [Stephen Hawking: Brief Answers to the Big Questions]


অধ্যায় ৩: মহাবিশ্বে অন্য কোনো বুদ্ধিমান প্রাণ আছে?

আমি মহাবিশ্বে জীবনের বিকাশ, বিশেষ করে বুদ্ধিমান জীবনের বিকাশ সম্পর্কে কিছু জল্পনাকল্পনা বা অনুমান করতে চাই। বুদ্ধিমান জীবনের শ্রেণীতে আমি মানব জাতিকে অন্তর্ভুক্ত করবো, যদিও ইতিহাস জুড়ে মানব জাতির বেশিরভাগ আচরণ বেশ বেকুবির ছিলো এবং প্রজাতির টিকে থাকার অনুকূলে ছিলো নাযে দুটো প্রশ্ন আমি আলোচনা করবো সেগুলো হচ্ছে যে মহাবিশ্বের অন্যত্র জীবনের অস্তিত্বের সম্ভাব্যতা কী? এবং ভবিষ্যতে কীভাবে জীবনের বিকাশ হতে পারে?

এটি সাধারণ অভিজ্ঞতার বিষয় যে সময়ের সাথে সাথে জিনিসপত্র বা পরিবেশ অব্যবস্থ এবং বিশৃঙ্খল হয়ে ওঠে। এই পর্যবেক্ষণের জন্য এমনকি একটি সূত্র আছে, তাপগতিবিদ্যার তথাকথিত দ্বিতীয় সূত্র। সূত্র মতে, মহাবিশ্বে মোট বিশৃঙ্খলার পরিমাণ বা, বিশৃঙ্খলা-মাত্রা (entropy), সবসময় সময়ের সাথে বৃদ্ধি পায়। কিন্তু, সূত্রটি শুধুমাত্র মোট বিশৃঙ্খলার পরিমাণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্যএকটি বস্তু বা ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা বাড়তে পারে যদি এটির আশপাশের বিশৃঙ্খলার পরিমাণ বেশি পরিমাণে বৃদ্ধি পায়।

একটি জীবন্ত সত্তার ক্ষেত্রে এই ব্যাপারটি ঘটেআমরা জীবনকে একটি শৃঙ্খলিত বা সুবিন্যস্ত ব্যবস্থা হিসেবে সংজ্ঞায়িত করতে পারি যা বিশৃঙ্খলা প্রবণতার বিরুদ্ধে নিজেকে রক্ষা করতে পারে এবং নিজেকে পুনরুৎপাদন করতে বা বংশবৃদ্ধি করতে পারে। অর্থাৎ, এটি অনুরূপ, কিন্তু স্বাধীন শৃঙ্খলিত বা সুবিন্যস্ত ব্যবস্থা সৃষ্টি করতে পারে। এই কাজগুলো করার জন্য, ব্যবস্থাটিকে কোনো শৃঙ্খলিত ধরণের শক্তিকে- যেমন খাবার, সূর্যালোক অথবা বৈদ্যুতিক শক্তিকে বিশৃঙ্খলিত ধরণের শক্তি- যেমন তাপে রূপান্তর করতে হবে। এভাবে, ব্যবস্থাটি এই প্রয়োজনীয়তা সন্তুষ্ট করতে পারে যে, মোট বিশৃঙ্খলতার পরিমাণ বৃদ্ধি পায়, একই সময়ে যখন এটি নিজের এবং তার সন্তানদের মধ্যে শৃঙ্খলার পরিমাণ বৃদ্ধি করে। ব্যাপারটি এই রকম মনে হয় যে বাবা-মায়েরা এমন একটি বাড়িতে বাস করছেন যেটি তারা প্রতিবার যখন নতুন বাচ্চা নেন ততোবার বিশৃঙ্খল থেকে বিশৃঙ্খলতর হয়।

আপনার বা আমার মতো যেকোনো জীবিত ব্যবস্থার সাধারণত দুটো উপাদান রয়েছে: এক প্রস্থ নির্দেশাবলী যা ব্যবস্থাটিকে কীভাবে চলতে এবং কীভাবে পুনরুৎপাদন করতে হয় তা জানায়, এবং এই নির্দেশাবলী চালানোর জন্য একটি প্রক্রিয়া। জীববিজ্ঞানে, এই দুটো অংশকে বলা হয় জিন এবং বিপাক-প্রক্রিয়া। কিন্তু এটি জোর দিয়ে বলা যায় যে তাদের জৈবিক হতে হবে এমন কোনো প্রয়োজন নেই। উদাহরণস্বরূপ, একটি কম্পিউটার ভাইরাস এমন একটি প্রোগ্রাম যা কম্পিউটারের স্মৃতিতে নিজের অনুলিপি তৈরি করে এবং অন্যান্য কম্পিউটারে স্থানান্তরিত হতে পারে। সুতারাং, এটি আমার দেওয়া একটি জীবিত ব্যবস্থার সংজ্ঞার সাথে মিলে। একটি জৈবিক ভাইরাসের মতন, এটি একটি অধঃপতিত রূপ, কারণ এটির শুধুমাত্র নির্দেশাবলী বা জিনগুলো আছে, কিন্তু নিজস্ব বিপাক-প্রক্রিয়া নেই। বরং, এটি হোস্ট কম্পিউটার কিংবা হোস্ট কোষের বিপাক-প্রক্রিয়াকে রিপ্রোগ্রাম করে। অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন যে ভাইরাসকে জীবন হিসেবে গণনা করা উচিত কিনা, কারণ তারা পরজীবী, এবং তারা হোস্ট ছাড়া স্বাধীনভাবে বিদ্যমান থাকতে পারে না। কিন্তু সেইক্ষেত্রে অনেক জীবন হচ্ছে পরজীবী, এমনকি আমরা-ও অন্তর্ভুক্ত, এই অর্থে যে তারা তাদের খাদ্য সরবরাহ এবং বেঁচে থাকার জন্য অন্যান্য জীবের উপর নির্ভর করে। আমি মনে করি কম্পিউটার ভাইরাসদের জীবন হিসেবে গণনা করা উচিতহয়তো এটি মানব প্রকৃতি সম্পর্কে নির্দেশ করছে যে জীবনের যে একমাত্র রূপ আমরা এই পর্যন্ত তৈরি করতে পেরেছি তা হলো সম্পূর্ণরূপে ধ্বংসাত্মক। আমাদের নিজস্ব রূপের জীবন সম্পর্কে কথা বলি। আমি পরে জীবনের বৈদ্যুতিন (electronic) ধরণ নিয়ে কথা বলবো।

আমরা সাধারণত জীবন হিসেবে যা মনে করি তা হচ্ছে কার্বন পরমাণু, এবং অন্যান্য কিছু পরমাণু যেমন নাইট্রোজেন অথবা ফসফরাসের মতো পরমাণুগুলো ভিত্তিক। কেউ কেউ ধারণা করতে পারেন যে অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থ, যেমন সিলিকন ভিত্তিক জীবন থাকতে পারে, কিন্তু কার্বন সবচেয়ে অনুকূল উদাহরণ বলে মনে হয়, কারণ এটির সমৃদ্ধ রসায়ন রয়েছে। বিদ্যমান বৈশিষ্ট্যগুলো নিয়ে কার্বন পরমাণু বিদ্যমান থাকার জন্য ভৌতগত ধ্রুবকগুলোর (physical constants), যেমন কিউসিডি স্কেল (QCD scale), বৈদ্যুতিক আধান, এবং এমনকি স্থান-কালের মাত্রার, সূক্ষ্ম সমন্বয় থাকা প্রয়োজন। যদি এই ধ্রুবকগুলোর মান উল্লেখযোগ্যভাবে ভিন্ন হতো, তবে কার্বন পরমাণুর কেন্দ্র স্থিতিশীল হতো না অথবা ইলেকট্রনগুলো কেন্দ্রে পতিত হতো। প্রথম দর্শনে মনে হতে পারে যে মহাবিশ্ব খুব সূক্ষ্মভাবে সমন্বিত। হয়তো এটি প্রমাণ করে করে যে মহাবিশ্বকে বিশেষভাবে মানবজাতির আবির্ভাবের জন্য নকশা করা হয়েছে। কিন্তু, এই ধরণের যুক্তির ক্ষেত্রে আপনাকে সর্তক হতে হবে, কারণ মানবীয় তত্ত্বের (Anthropic Principle) কারণে মহাবিশ্ব সম্পর্কে আমাদের তত্ত্বগুলো আমাদের নিজস্ব অস্তিত্বের সাথে অবশ্যই সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। এটি এই স্বতঃস্ফূর্ত সত্যের উপর ভিত্তি করে যে যদি মহাবিশ্ব জীবনের জন্য উপযুক্ত না হতো তবে আমরা কেনো এটি এতো সূক্ষ্মভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ তা জিজ্ঞাসা করতাম না। যে কেউ মানবীয় তত্ত্বকে এর শক্তিশালী অথবা দুর্বল সংস্করণ হিসেবে উপস্থাপন করতে পারেন। শক্তিশালী মানবীয় তত্ত্বের ক্ষেত্রে, একজন মনে করেন যে বিভিন্ন ভিন্ন মহাবিশ্ব রয়েছে, প্রতিটিতে ভৌভগত ধ্রুবকের বিভিন্ন মান নিয়ে। অল্প কিছু সংখ্যকে, মানগুলো এমন যে কার্বন পরমাণুর মতন বস্তু বা পদার্থের অস্তিত্ব সম্ভব, যা জীবিত ব্যবস্থাসমূহের জন্য কাঁচামাল হিসেবে কাজ করে। যেহেতু আমরা এই রকম একটি মহাবিশ্বে বসবাস করছি, তাই আমাদের অবাক হওয়া উচিত নয় যে ভৌতগত ধ্রুবকগুলো সূক্ষ্মভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ। যদি সেগুলো না হতো, তবে আমরা এখানে থাকতাম না। মানবীয় তত্ত্বের শক্তিশালী সংস্করণটি তাই তেমন বেশি সন্তোষজনক নয়, কারণ অন্যসব মহাবিশ্বের অস্তিত্বের ব্যাপারে কী কর্মক্ষম অর্থ করা যায়? এবং সেগুলো যদি আমাদের নিজস্ব মহাবিশ্ব থেকে পৃথক হয়ে থাকে, তবে সেগুলোতে কী ঘটে তা কীভাবে আমাদের মহাবিশ্বকে প্রভাবিত করতে পারে? বরং, আমি সেটি গ্রহণ করবো যা দুর্বল মানবীয় তত্ত্ব হিসেবে পরিচিত। অর্থাৎ, আমি ভৌতগত ধ্রুবকগুলোর মানগুলো প্রদত্ত হিসেবে ধরে নেবোকিন্তু আমি দেখবো কী ধরণের উপসংহারে পৌঁছানো যায় যে মহাবিশ্বের ইতিহাসের এই পর্যায়ে এই গ্রহে প্রাণ বা জীবন বিদ্যমান।

১৩.৮ বিলিয়ন বছর আগে যখন মহাবিস্ফোরণে মহাবিশ্ব শুরু হয়েছিলো তখন কোনো কার্বন ছিলো না। এটি এতো বেশি উত্তপ্ত ছিলো যে সব বস্তু বা পদার্থ প্রোটন এবং নিউট্রন কণাগুলোর আকারে ছিলো। প্রথম দিকে, সমান সংখ্যক প্রোটন এবং নিউট্রন ছিলো। যাইহোক, যখন মহাবিশ্ব প্রসারিত হতে লাগলো, এটি শীতল হতে শুরু করলো। মহাবিস্ফোরণের এক মিনিট পরে, মহাবিশ্বের তাপমাত্রা নেমে এক বিলিয়ন ডিগ্রীতে পৌঁছেছিলো, যা সূর্যের তাপমাত্রা থেকে একশ গুণ বেশি। এই তাপমাত্রায়, নিউট্রনগুলো প্রোটনে ক্ষয় হতে শুরু করলো।

যদি এইরকম চলতে থাকতো তবে মহাবিশ্বের সমস্ত বস্তু সবচেয়ে সরল উপাদান, হাইড্রোজেনে পরিণত হতো, যেটির পরমাণুকেন্দ্র শুধুমাত্র একটি প্রোটন দ্বারা গঠিত। কিন্তু কিছু কিছু নিউট্রন প্রোটনগুলোর সাথে সংঘর্ষে বা ধাক্কায় লাগলো এবং মিলিত হয়ে পরবর্তী সরল উপাদান, হিলিয়াম, গঠন করেছিলো, যার পরমাণুকেন্দ্র দুটো প্রোটন এবং দুটো নিউট্রন নিয়ে গঠিত। কিন্তু কোনো ভারী উপাদান, যেমন কার্বন কিংবা অক্সিজেন মহাবিশ্বের প্রথম দিকে সৃষ্টি হয় নি। এটি কল্পনা করা কঠিন যে কেউ হাইড্রোজেন এবং হিলিয়াম থেকে কোনো জীবন ব্যবস্থা সৃষ্টি করতে পারে- এবং যাইহোক, মহাবিশ্বের প্রথম দিক তখনো পরমাণু একত্রিত হয়ে অণু গঠনের জন্য বেশি রকমের উত্তপ্ত ছিলো।  

মহাবিশ্ব প্রসারিত হতে থাকলো এবং শীতল হতে লাগলো। কিন্তু কিছু কিছু অঞ্চল অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় সামান্য বেশি ঘনত্বের ছিলো এবং সেই অঞ্চলগুলোর অতিরিক্ত বস্তু সেই অঞ্চলগুলোর সম্প্রসারণকে হ্রাস করে এবং অবশেষে বন্ধ করে দেয়পরিবর্তে, সেগুলো ছায়াপথসমূহ এবং নক্ষত্রসমূহ গঠন করে, মহাবিস্ফোরণের দুই বিলিয়ন বছর পরেপ্রথম দিকের কিছু কিছু নক্ষত্র আমাদের সূর্যের চেয়ে-ও বেশি ভারী (বিশাল) ছিলো, তারা আমাদের সূর্যের চেয়ে বেশি উত্তপ্ত ছিলো এবং আদি হাইড্রোজন এবং হিলিয়াম পরমাণুগুলোকে পুড়িয়ে ভারী উপাদানসমূহ, যেমন কার্বন, অক্সিজেন এবং লোহায় পরিণত করেছিলো। এই প্রক্রিয়া মাত্র কয়েক মিলিয়ন বছর সময় নিয়েছিলো। এর পরে, এই নক্ষত্রগুলোর কিছু কিছু নক্ষত্র অতিকায় নবজ্যোতিষ্ক (supernovae) হিসেবে বিস্ফোরিত হয় এবং ভারী উপাদানগুলোকে মহাকাশে ছড়িয়ে পড়ে, পরবর্তী প্রজন্মের নক্ষত্রগুলো গঠনের কাঁচামাল।

অন্যান্য নক্ষত্রগুলো আমাদের থেকে অনেক দূরে বিধায় সরাসরি আমাদের পক্ষে দেখা সম্ভব নয় তাদেরকে ঘিরে গ্রহ ঘুরছে কিনা। যাইহোক, দুটো কৌশল আছে যেগুলো আমাদেরকে অন্যান্য নক্ষত্রগুলোর চারপাশে গ্রহ আবিষ্কার করতে সক্ষম করেছে। একটি হচ্ছে নক্ষত্রকে পর্যবেক্ষণ করা এবং নির্ণয় করা যে এটি থেকে যে আলো আসছে তা ধ্রুব কিনা। যদি গ্রহ ঘুরতে ঘুরতে নক্ষত্রের সামনে চলে আসে তবে নক্ষত্র থেকে আসা আলো সামান্য অস্পষ্ট হবে। নক্ষত্রটিকে সামান্য অনুজ্জ্বল মনে হবে। দ্বিতীয় কৌশলটি হচ্ছে নক্ষত্রটির অবস্থান সঠিকভাবে পরিমাপ করা। যদি কোনো গ্রহ নক্ষত্রটিকে ঘিরে ঘুরতে থাকে, তবে গ্রহটি নক্ষত্রটির অবস্থানকে কিছুটা টলমল করে দেবে। এই ব্যাপারটি বারবার পর্যবেক্ষণ করা যেতে পারে এবং যদি দেখা যায় যে নিয়মিতভাবে নক্ষত্রটির অবস্থান কিছুটা টলমল হয় তবে ধারণা করা যায় যে এটি হয়েছে নক্ষত্রটিকে ঘিরে গ্রহের ঘূর্ণনের ফলে। এই কৌশলগুলো প্রায় ২০ বছর আগে প্রথম প্রয়োগ করা হয়েছিলো এবং এখন পর্যন্ত কয়েক হাজার গ্রহ দূরবর্তী নক্ষত্রগুলোকে ঘিরে ঘুরছে এমনটি আবিষ্কৃত হয়েছে। ধারণা করা হয় যে প্রতি পাঁচটি নক্ষত্রের একটিতে আমাদের পৃথিবীর মতন একটি গ্রহ নক্ষত্রটিকে ঘিরে এই দূরত্বে ঘুরছে যে যার ফলে আমাদের জানা জীবন সেই গ্রহে সম্ভব। আমাদের নিজস্ব সৌরজগত প্রায় সাড়ে চার বিলিয়ন বছর আগে অথবা মহাবিস্ফোরণের নয় বিলিয়ন বছরের চেয়ে একটু পরে গঠিত হয়েছিলো পূর্বের নক্ষত্রগুলোর অবশিষ্টাংশগুলোর মিশ্রিত গ্যাস থেকে। পৃথিবী মূলত কার্বন ও অক্সিজেনসহ ভারী উপাদানগুলো থেকে গঠিত হয়েছিলো। কোনোভাবে এই পরমাণুগুলোর কিছু মিলে ডিএনএ অণূ সৃষ্টি করেছিলো। এটির বিখ্যাত দ্বি-কম্বুরেখ (double-helix) আকৃতি রয়েছে, যা ফ্রান্সিস ক্রিক (Francis Crick) এবং জেমস ওয়াটসন (James Watson) ১৯৫০ এর দশকে কেমব্রিজের নতুন জাদুঘর এলাকার একটি কুটিরে আবিষ্কার করেছিলেন। এই কম্বুরেখার দুটো হারকে সংযুক্ত করে নাইট্রোজেন বেইসের (base) জোড়াসমূহ। চার ধরণের নাইট্রোজেন বেইস আছে- এডেনিন (adenine), সাইটোসিন (cytosine), গোয়ানিন (guanine), থাইমিন (thymine)একটি হারের এডেনিন অন্য হারের থাইমিনের সাথে মিলে এবং গোয়ানিন সাইটোনিনের সাথে। সুতারাং একটি হারে নাইট্রোজেন বেইসের ক্রম (sequence) অন্য হারে একটি অনন্য, পরিপূরক ক্রম (complementary sequence) নির্ধারণ করে। এই দুটো হার পরে পৃথক হয়ে প্রতিটি আরো হার তৈরির জন্য মাপদণ্ড (template) হিসেবে কাজ করে। সুতারাং ডিএনএ অণুসমূহ নাইট্রোজেন বেইসগুলোর ক্রমে যে জেনেটিক তথ্য সংকলিত আছে তা পুনরুৎপাদন করতে পারে। ক্রমটির কিছু অংশ প্রোটিন এবং অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থ বা অণু তৈরি করার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে, যা ক্রমে সংকলিত নির্দেশাবলী সম্পাদন করতে পারে এবং ডিএনএর নিজেকে পুনরুৎপাদানের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল জড়ো করতে পারে

আমি আগে যেমনটা বলেছিলাম, আমরা জানি না কীভাবে ডিএনএ অণু প্রথম আবির্ভূত হয়েছিলো। যেহেতু বিক্ষিপ্ত বা এলোমেলোভাবে ডিএনএ অণু সৃষ্টির সম্ভাবনা খুব কম, কিছু লোক প্রস্তাব করেছে যে পৃথিবীতে প্রাণের আবির্ভাব হয়েছে অন্য কোনো স্থান থেকে, যেমন, মঙ্গল গ্রহ থেকে ভেঙে আসা কোনো পাথরে এসেছিলো, যখন-ও গ্রহগুলো স্থিতিশীল হয় নি তখন- এবং ছায়াপথ জুড়ে প্রাণের বীজ বিরাজ করছে। কিন্তু মহাকাশে বিকিরণে দীর্ঘদিন ধরে ডিএনএ বেঁচে থাকতে পারে বলে মনে হচ্ছে না।

যদি একটি গ্রহে প্রাণের আবির্ভাব খুব অসম্ভাব্য হয়, একজন ধারণা করতে পারে যে এটি দীর্ঘ সময় নিতে পারে। আরো সঠিকভাবে, একজন আশা করতে পারে যে সূর্য স্ফীত হয়ে ওঠা এবং পৃথিবীকে গ্রাস করার আগে, বিবর্তনের মাধ্যমে আমাদের মতো বুদ্ধিমান প্রাণীর আগমনের জন্য যতো সময় দরকার প্রাণের আবির্ভাব ততো দেরিতে হয়েছে সূর্যের জীবনকালে যে সময়সীমায় এটি ঘটতে পারে তা হচ্ছে দশ বিলিয়ন বছর। এই সময়ে, জীবনের একটি বুদ্ধিমান রূপ মহাকাশ ভ্রমণের কৌশল আয়ত্ত করতে পারে এবং আরেকটি নক্ষত্রে স্থানান্তর হতে পারে। যদি স্থানান্তর সম্ভব না হয়, তবে পৃথিবীতে জীবন ধ্বংস হয়ে যাবে।

জীবাশ্ম প্রমাণ আছে যে পৃথিবীতে প্রায় সাড়ে তিন বিলিয়ন বছরে আগে এক প্রকারের প্রাণ বা জীবন ছিলো। এটি পৃথিবী স্থিতিশীল হওয়া এবং প্রাণের বিকাশের জন্য যথেষ্ট শীতল হওয়ার কেবল ৫০০ মিলিয়ন বছর পরেই হতে পারে। কিন্তু জীবন বা প্রাণ মহাবিশ্বে বিকাশের জন্য সাত বিলিয়ন বছর গ্রহণ করতে পারতো এবং তারপর-ও আমাদের মতো সত্তা, যারা জীবনের উৎস সম্পর্কে প্রশ্ন করে তাদের আবির্ভাবের জন্য যথেষ্ট সময় ছিলো। যদি একটি গ্রহে জীবন বিকাশের সম্ভাবনা খুবই কম হয়ে থাকে, তবে পৃথিবীতে কেনো ব্যবহারযোগ্য সময়ের ১/১৪ ভাগেই জীবনের আবির্ভাব হয়েছিলো?

পৃথিবীতে জীবনের যথাসময়ের পূর্বে আবির্ভাব প্রস্তাব করে যে উপযুক্ত পরিবেশে স্বতঃস্ফূর্তভাবে জীবনের সৃষ্টির ভালো সম্ভাবনা রয়েছে। হয়তো কোনো সরলতর প্রক্রিয়া বা সংগঠন ছিলো যা ডিএনএ তৈরি করেছিলো। যখন ডিএনএর আবির্ভাব হলো, এটি এতো বেশি সফল ছিলো যে এটি পূর্ববর্তী প্রক্রিয়া বা রূপকে পুরোপুরি প্রতিস্থাপিত করে ফেলেছিলো। আমরা জানি না এই পূর্ববর্তী প্রক্রিয়া বা রূপ কী ছিলো, তবে একটি সম্ভাবনা হচ্ছে যে আরএনএ (RNA)

আরএনএ ডিএনএর মতো, তবে সরল, এবং দ্বি-কম্বুরেখ কাঠামো ছাড়া। স্বল্প দৈর্ঘ্যের আরএনএ নিজেদের ডিএনএর মতো পুনরুৎপাদন করতে পারে এবং অবশেষে হয়তো ডিএনএ তৈরি করে থাকতে পারে। আমরা পরীক্ষাগারে অ-প্রাণ (non-living) উপাদান থেকে নিউক্লিক অ্যাসিড তৈরি করতে পারি না। তবে ৫০০ মিলিয়ন বছর সময় এবং পৃথিবীর অধিকাংশ মহাসাগর দ্বারা আচ্ছাদিত ছিলো, এটি যুক্তিসঙ্গতভাবে সম্ভব যে আরএনএ অপ্রত্যাশিতভাবে বা আকস্মিকভাবে সৃষ্টি হয়েছিলো।

ডিএনএ যখন নিজেকে প্রথম পুনরুৎপাদন করেছিলো, তখন বিক্ষিপ্ত বা লক্ষ্যহীনভাবে কিছু ক্রটি হতো, যেগুলোর অধিকাংশ ক্ষতিকর হতো এবং মারা যেতো। কিছু কিছু ক্রটি নিরপেক্ষ বা প্রভাবহীন হতো- যেগুলো জিনের কার্যাবলিকে প্রভাবিত করতো না। এবং কিছু কিছু ক্রটি প্রজাতির বেঁচে থাকার অনুকূলে ছিলো- যা ডারউইনের প্রাকৃতিক নির্বাচন (natural selection) দ্বারা নির্বাচন করা হতো।

জৈবিক বিবর্তনের প্রক্রিয়া প্রথমে খুব ধীর ছিলো। প্রাচীনতম কোষগুলো থেকে বহুকোষীয় প্রাণীর বিকাশের জন্য প্রায় আড়াই বিলিয়ন বছর লেগেছিলো। কিন্তু এদের মধ্যে কয়েকটিকে মাছে, এবং কিছু মাছকে, স্তন্যপায়ী প্রাণীতে পরিণত হওয়ার জন্য এক বিলিয়ন বছরের কম সময় লেগেছিলো। এরপর বিবর্তন আরো গতিময় হয়ে উঠেছিলো বলে মনে হয়। প্রথম দিকের স্তন্যপায়ী প্রাণীদের থেকে আমাদের বিকাশের জন্য শুধুমাত্র প্রায় একশ মিলিয়ন বছর লেগেছিলো। এর কারণ প্রথম দিকের স্তন্যপায়ী প্রাণীদের ইতিমধ্যে আমাদের প্রয়োজনীয় অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলো ছিলো। প্রথম দিকের স্তন্যপায়ী প্রাণীদের থেকে মানুষের বিকাশের জন্য যা প্রয়োজন ছিলো তা হচ্ছে কিছু সূক্ষ্ম-সমন্বয়।

কিন্তু মানবজাতিকে নিয়ে বিবর্তন এক সংকটপূর্ণ পর্যায়ে পৌঁছেছে, ডিএনএর বিকাশের গুরুত্ব তুলনা করলে। এটি হচ্ছে ভাষার বিকাশ নিয়ে, বিশেষ করে লিখিত ভাষার উন্নয়ন নিয়ে। এর অর্থ হচ্ছে যে বংশানুগতিকভাবে ডিএনএর মাধ্যমে ছাড়া-ও প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে তথ্য প্রেরণ করা যেতে পারে। নথিভুক্ত ইতিহাসের গত ১০ হাজার বছরে মানুষের ডিএনএতে জৈবিক বিবর্তনের মাধ্যমে কিছু সনাক্তযোগ্য পরিবর্তন ঘটেছে, কিন্তু প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের কাছে প্রদত্ত জ্ঞান বা তথ্যের পরিমাণ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। আমি বিজ্ঞানী হিসেবে আমার দীর্ঘ পেশাজীবনে মহাবিশ্ব সম্পর্কে যে জ্ঞান আহরণ করেছি তার কিছু আপনাদের জানানোর জন্য বই লিখেছি, এবং তার ফলে আমি আমার মস্তিস্ক থেকে জ্ঞান পৃষ্ঠায় স্থানান্তর করছি যাতে আপনি পড়তে পারেন।

মানুষের ডিম্বাণু বা শুক্রাণুর ডিএনএতে প্রায় তিন বিলিয়ন নাইট্রোজেন বেইসের জোড়া থাকে। কিন্তু এই ক্রমে সংকলিত অধিকাংশ তথ্য অনেক অকার্যকর বা নিষ্ক্রিয় বলে মনে হয়। সুতারাং আমাদের জিনে দরকারী তথ্যের মোট পরিমাণ সম্ভবত কয়েক মিলিয়ন বিট (bits)এক বিট তথ্য হচ্ছে একটি হ্যাঁ/না প্রশ্নের উত্তর। বিপরীতে, একটি মলাটওয়ালা উপন্যাসে দুই মিলিয়ন বিটের তথ্য থাকতে পারে। সেইদিক থেকে, একজন মানুষ প্রায় পঞ্চাশটি হ্যারি পটার বইয়ের সমতুল্য, এবং একটি প্রধান জাতীয় গ্রন্থাগারে প্রায় পাঁচ মিলিয়ন বই বা প্রায় দশ ট্রিলিয়ন বিট তথ্য থাকতে পারে। বই বা ইন্টারনেটের মাধ্যমে হস্তান্তরিত তথ্যের পরিমাণ ডিএনএর তথ্যের ১০০,০০০ গুণ বেশি।

আরো গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে যে বইয়ের তথ্য আরো বেশি দ্রুত পরিবর্তন করা এবং হালনাগাদ করা যায়। পূর্ববর্তী কম উন্নত বনমানুষ (apes) থেকে আমাদের বিকশিত হতে কয়েক মিলিয়ন বছর সময় লেগেছিলো। সেই সময়ে, আমাদের ডিএনএতে দরকারী তথ্য সম্ভবত মাত্র কয়েক মিলিয়ন বিট পরিবর্তিত হয়েছে, তাই মানুষের জৈবিক বিবর্তনের হার বছরে প্রায় এক বিট। বিপরীতে, প্রতি বছর ইংরেজি ভাষায় প্রায় ৫০ হাজার বই প্রকাশিত হয়, যার মধ্যে শত কোটি কোটি বিট তথ্য রয়েছে। অবশ্যই, বইগুলোর এই তথ্যের বিশাল অংশ আবর্জনা এবং জীবনের কোনো রূপের জন্য ব্যবহারযোগ্য নয়। কিন্তু সেই সত্বেও, যে হারে দরকারী তথ্য যোগ করা যায় তা কোটি কোটি না হলে-ও মিলিয়ন মিলিয়ন বিট, ডিএনএর চেয়ে অনেক বেশি।

এর মানে হচ্ছে যে আমরা বিবর্তনের এক নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করেছি। প্রথম দিকে, বিবর্তন প্রাকৃতিক নির্বাচন দ্বারা দিকনির্দেশিত হয়েছিলো- বিক্ষিপ্ত বা লক্ষ্যহীন পরিবর্তনের মাধ্যমে। এই ডারউইনীয় পর্যায় প্রায় সাড়ে তিন বিলিয়ন বছর সময় নিয়েছিলো এবং আমাদেরকে জন্ম দিয়েছে, যারা তথ্য বিনিময়ের জন্য ভাষা আবিষ্কার ও বিকাশ করেছে। কিন্তু গত ১০ হাজার বছর বা এইরকম সময়ে আমরা যাকে বাহ্যিক প্রেরণ (external transmission) পর্যায় বলতে পারি সেটিতে আছি। এতে, তথ্যের অভ্যন্তরীণ নথি প্রজন্মান্তরে অল্প কিছু পরিবর্তিত হয়ে হস্তান্তরিত হয়েছে। কিন্তু বাহ্যিক নথি- বই এবং অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদি তথ্য সংরক্ষণের রূপ- ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

কিছু মানুষ বিবর্তন শব্দটি শুধুমাত্র অভ্যন্তরীণভাবে প্রেরিত জেনেটিক তথ্য বা উপাদানের ক্ষেত্রে ব্যবহার করবে এবং বাহ্যিকভাবে হস্তান্তরিত তথ্যের ক্ষেত্রে এই শব্দের প্রয়োগের ক্ষেত্রে আপত্তি করবে। কিন্তু আমি মনে করি এটি একটি সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি। আমরা শুধু আমাদের জিনের চেয়ে বেশি কিছু। আমরা আমাদের গুহাজীবী পূর্বপুরুষদের চেয়ে শক্তিশালী বা অন্তর্নিহিতভাবে আরো বুদ্ধিমান না হতে পারি। কিন্তু তাদের কাছ থেকে আমাদের যা পৃথক করে তা হচ্ছে আমাদের জ্ঞান, যা আমরা গত ১০ হাজার বছর ধরে, বিশেষ করে গত ৩০০ বছরে সংগ্রহ করেছি। আমি মনে করি একটি বিস্তৃত দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা ও বাহ্যিকভাবে প্রেরিত তথ্য এবং ডিএনএকে মানবজাতির বিবর্তনের ক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্ত করা যুক্তিসঙ্গত।

বাহ্যিক প্রেরণের জন্য বিবর্তনের সময়কাল হচ্ছে তথ্য সংগ্রহের সময়কালের সমান। এটি শত শত বছর, এমনকি হাজার হাজার বছর হতো। কিন্তু এখন এই সময়কাল প্রায় পঞ্চাশ বছর বা তার কমে এসে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে, আমরা যে মস্তিস্ক দিয়ে তথ্য প্রক্রিয়া করি সেটি ডারউইনীয় সময়কালে, হাজার হাজার বছরে ধরে বিবর্তিত হয়েছে। এটি সমস্যা সৃষ্টি করা শুরু করেছে। অষ্টাদশ শতাব্দীতে বলা যেতো যে একজন মানুষ ছিলেন যিনি লিখিত সব বই পড়ে ফেলেছিলেন। কিন্তু আজকাল, আপনি যদি একদিনে একটি বই পড়েন, তবে একটি জাতীয় গ্রন্থাগারের বইগুলো পড়ার জন্য আপনার হাজার হাজার বছর লাগবেযে সময়ে, আরো অনেক বই লেখা হয়ে যাবে।

এর অর্থ এই যে, কোনো একজন ব্যক্তিই মানুষের জ্ঞানের একটি ছোট অংশের চেয়ে বেশি জ্ঞান আয়ত্ত করতে পারে না। মানুষকে বিশেষজ্ঞ হতে হয়, সীমিত এবং সীমিততর বিষয় বা ক্ষেত্রে। এটি ভবিষ্যতে একটি প্রধান সীমাবদ্ধতা হতে পারে। আমরা গত ৩০০ বছরে ধরে যে সূচকীয় হারে জ্ঞান অর্জন করেছি সেটি নিশ্চিতভাবে দীর্ঘদিন চালিয়ে যেতে পারবো না। ভবিষ্যতের প্রজন্মের জন্য আরো বেশি সীমাবদ্ধতা এবং বিপদ হচ্ছে যে আমাদের এখনো সহজাত প্রবৃত্তি, বিশেষ করে আমাদের গুহামানব সময়ের আক্রমণাত্মক মনোবৃত্তিগুলো রয়ে গেছে। আগ্রাসন, অন্য মানুষকে আয়ত্তে আনা কিংবা হত্যা করা এবং তাদের নারীদের ও খাদ্য কেড়ে নেয়া, বেঁচে থাকার ক্ষেত্রে বর্তমান সময় পর্যন্ত নিশ্চিত সুবিধাজনক ছিলো। কিন্তু এটি এখন সমগ্র মানবজাতিকে এবং পৃথিবীর বাকি সব জীবনকে ধ্বংস করতে ফেলতে পারেএকটি পরমাণু যুদ্ধ এখনো সবচেয়ে আশু বিপদ, কিন্তু আরো অনেকগুলো আছে, যেমন জিনগতভাবে প্রকৌশলিত ভাইরাস (genetically engineered virus) ছেড়ে দেওয়া অথবা গ্রিনহাউজ প্রভাব (greenhouse effect) অস্থির রূপ লাভ করা।

আমাদের আরো বুদ্ধিমান এবং উন্নত প্রকৃতির করার জন্য ডারউইনীয় বিবর্তনের জন্য অপেক্ষা করার আর সময় নেই। কিন্তু আমরা এখন প্রবেশ করছি যাকে বলতে পারেন স্ব-পরিকল্পিত বিবর্তনের নতুন পর্যায়ে, যেখানে আমরা আমাদের ডিএনএ পরিবর্তন এবং উন্নত করতে সক্ষম হবো। আমরা এখন ডিএনএ বিশদভাবে বর্ণনা করতে পারি, যার মানে আমরা জীবনের পুস্তক পাঠ করেছি, তাই আমরা সংশোধন করতে লিখতে শুরু করতে পারি। প্রথমে, এই পরিবর্তনগুলো জিনগত ক্রটি যেমন সিস্টিক ফাইব্রোসিস (cystic fibrosis) এবং পেশীয় পুষ্টিহীনতা (muscular dystrophy) রোগ, যেগুলো শুধুমাত্র একটি জিন দিয়ে নিয়ন্ত্রিত হয় এবং তাই সনাক্ত করা এবং মেরামত করা মোটামুটি সহজ, সেগুলো মেরামতে সীমিত থাকবে। অন্যান্য গুণাবলী, যেমন বুদ্ধিমত্তা, সম্ভবত অনেকগুলো জিন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং সেগুলো খুঁজে বের করা এবং সেগুলোর মধ্যকার সম্পর্ক নির্ণয় করা কঠিন হবে। তবুও, আমি নিশ্চিত যে এই শতাব্দীর মধ্যে মানুষেরা কীভাবে বুদ্ধিমত্তা এবং আগ্রাসনের মতো সহজাত প্রবৃত্তিগুলোকে পরিবর্তন করা যায় সেটি আবিষ্কার করে ফেলবে।

সম্ভবত মানুষের নিজের জিনগত প্রকৌশলের বিরুদ্ধে আইন প্রণিত হবে। কিন্তু কিছু মানুষ মানব বৈশিষ্ট্যাবলি, যেমন স্মৃতিশক্তি বাড়ানো, রোগ প্রতিরোধ এবং জীবনের দৈর্ঘ্য ইত্যাদির উন্নত করার প্রলোভন প্রতিরোধ করতে পারবেন না। যখন এই অতিমানবেরা আবির্ভূত হবে, তখন অনুন্নত মানুষ, যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে না, তাদের সাথে বড়সড় রাজনৈতিক সমস্যা হবেহয়তো তারা মরে যাবে কিংবা অপ্রয়োজনীয় হয়ে যাবে। পরিবর্তে, যারা ক্রমবর্ধমান হারে নিজেদের উন্নতি করছে এমন আত্ম-নকশাকারী সত্তার একটি জাতি সৃষ্টি হবে

যদি আত্ম-বিধ্বংসের ঝুঁকি হ্রাস করতে বা দূর করতে মানবজাতি নিজেকে নিজে নকশা করতে সক্ষম হয়, তবে মানবজাতি সম্ভবত অন্য গ্রহ এবং নক্ষত্রে উপনিবেশ গড়ার জন্য ছড়িয়ে পড়বে। কিন্তু দীর্ঘ-দূরত্বের মহাকাশ ভ্রমণ আমাদের মতো ডিএনএ ভিত্তিক, রসায়ন ভিত্তিক জীবনের রূপের জন্য কঠিন হবে। সময় ভ্রমণের তুলনায় এই ধরণের জীবনের প্রাকৃতিক জীবনসীমা অনেক ছোট। আপেক্ষিকতার তত্ত্ব অনুসারে, কোনো কিছুই আলোর চেয়ে দ্রুত ভ্রমণ করতে পারে না, তাই আমাদের জন্য নিকটতম নক্ষত্রে আসা-যাওয়ার জন্য কমপক্ষে আট বছর এবং ছায়াপথের কেন্দ্রে আসা-যাওয়ার জন্য প্রায় ৫০ হাজার বছর লাগবে। বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনিগুলোতে এই সমস্যার সমাধান করা হয় স্থান ওয়ার্প (space warp) ব্যবহার করে কিংবা অন্য মাত্রায় ভ্রমণের মাধ্যমে। কিন্তু আমার মনে হয় না এগুলো কখনো সম্ভব হবে, প্রাণ বা জীবন যতোই না বুদ্ধিমান হয়ে ওঠে। আপেক্ষিকতার তত্ত্ব অনুসারে, কেউ যদি আলোর চেয়ে দ্রুত ভ্রমণ করতে পারে, তবে সে অতীতে ভ্রমণ করতে পারবে এবং সেই ক্ষেত্রে লোকজন অতীতে ফিরে গিয়ে অতীত পরিবর্তনের সমস্যা সৃষ্টি করবে। সেই ক্ষেত্রে ভবিষ্যত থেকে অনেক সংখ্যক পর্যটক-ও ইতিমধ্যে দেখতে পাবার কথা, যারা আমাদের অদ্ভুত, পুরাতন ব্যবস্থা দেখতে আগ্রহী।

ডিএনএ-ভিত্তিক প্রাণ বা জীবনের অনির্দিষ্টকালের জন্য বা অন্তত ১০০,০০০ বছর বেঁচে থাকার জন্য হয়তো জিনগত প্রকৌশলের ব্যবহার করা যেতে পারেকিন্তু একটি সহজ উপায়, যা ইতিমধ্যে প্রায় আমাদের ক্ষমতার মধ্যে, তা হচ্ছে মেশিনকে পাঠানো। সেগুলোকে  নক্ষত্রমণ্ডল ভ্রমণের জন্য যথেষ্ট দীর্ঘকাল টিকে থাকার উপযোগী নকশা করা যেতে পারে। যখন তারা একটি নতুন নক্ষত্রে পৌঁছবে, তারা একটি উপযুক্ত গ্রহে অবতরণ করবে এবং আরো অনেক মেশিন তৈরির জন্য উপাদান আহরণ করবে, সেই মেশিনগুলোকে আরো অন্যান্য নক্ষত্রে পাঠানো যাবে। এই মেশিনগুলো জীবনের একটি নতুন রূপ হতে পারে, আণবিক উপাদান নয় বরং যান্ত্রিক এবং বৈদ্যুতিক উপাদানের উপর ভিত্তি করে গড়া। তারা অবশেষে ডিএনএ ভিত্তিক জীবনকে প্রতিস্থাপন করতে পারবে, ঠিক যেমন ডিএনএ হয়তো এর পূর্ববর্তী রূপের জীবনকে প্রতিস্থাপিত করেছে।

*
ছায়াপথ অন্বেষণের সময়ে আমাদের কোনো ভিনগ্রহী প্রাণের সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা কতোটুকু? যদি পৃথিবীতে জীবনের আবির্ভাবের সময়কাল সম্পর্কে যুক্তি সঠিক হয়ে থাকে, তবে অনেকগুলো গ্রহ থাকার কথা যেখানে প্রাণের অস্তিত্ব আছে। এইসব নাক্ষত্রিক ব্যবস্থার কিছু কিছু পৃথিবী সৃষ্টির পাঁচ বিলিয়ন বছর আগে গঠিত হয়ে থাকতে পারে- তবে কেনো ছায়াপথ আত্ম-নকশাকারী যান্ত্রিক অথবা জৈবিক প্রাণে ভর্তি নয়? যাইহোক, আমি ইউএফওগুলোতে (UFO) মহাকাশ থেকে আসা ভিনগ্রহী আছে এইসব প্রস্তাব অগ্রাহ্য করি, যেহেতু আমি মনে করি যে ভিনগ্রহীদের যেকোনো পরিদর্শন আরো স্পষ্ট রকমের হবে এবং সম্ভবত আরো বেশি অপ্রীতিকর হবে।

তবে কেনো আমাদের কেউ এখনো পরিদর্শন করে নি? হয়তো স্বতঃস্ফূর্তভাবে জীবনের আবির্ভাবের সম্ভাবনা ছায়াপথে- অথবা পর্যবেক্ষণযোগ্য মহাবিশ্বে এতো কম যে- শুধুমাত্র পৃথিবীই হচ্ছে একমাত্র গ্রহ যেখানে এটি ঘটেছে। আরেকটি সম্ভাবনা হচ্ছে যে অন্যত্র কোষের মতো স্ব-পুনরুৎপাদনকারী ব্যবস্থার যুক্তিসঙ্গত সম্ভাবনা ছিলো, কিন্তু জীবনের রূপগুলোর অধিকাংশই বুদ্ধিমত্তায় বিবর্তিত হয় নি। আমরা এটি চিন্তা করে অভ্যস্ত যে বুদ্ধিমান প্রাণ বা জীবন বিবর্তনের অনিবার্য পরিণতি, কিন্তু হয়তো এটি নয়? আমাদের এই ধরণের যুক্তির ব্যাপারে সন্দিহান হওয়ার জন্য মানবীয় তত্ত্বের আমাদের সতর্ক করা উচিত। এটি বেশি সম্ভাবনার যে হয়তো বিবর্তন একটি বিক্ষিপ্ত প্রক্রিয়া, এবং সম্ভবত বুদ্ধিমত্তা বিবর্তনের সম্ভাব্য বিপুল সংখ্যক ফলাফলের মধ্যে একটি।

এটি এমনকি স্পষ্ট নয় যে দীর্ঘমেয়াদি বেঁচে থাকার জন্য বুদ্ধিমত্তার কোনো উত্তরজীবিতা মান (survival value) আছে কিনা। আমাদের কর্মের কারণে পৃথিবী থেকে সব প্রাণ মুছে গেলেও ব্যাকটেরিয়া, এবং অন্যান্য একক-কোষী জীব বা প্রাণগুলো বেঁচে থাকতে পারে। সম্ভবত বুদ্ধিমত্তা পৃথিবীতে জীবনের জন্য একটি অসম্ভাব্য বিকাশ ছিলো, কারণ বিবর্তনের ক্রমবর্ধমান কালে, একক কোষ থেকে বহুকোষী প্রাণীতে, যেগুলো বুদ্ধিমত্তার দরকারী অগ্রদূত ছিলো, সেগুলোতে বিবর্তিত হতে একটি দীর্ঘ সময় লেগেছিলো- আড়াই বিলিয়ন বছর। এটি সূর্যের ফুরিয়ে যাওয়ার আগে মোট ল্ভ্য সময়ের একটি ভালো ভগ্নাংশ, যা এই অনুজ্ঞার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে যে জীবনের বুদ্ধিমত্তায় বিকাশের সম্ভাবনা কম। সেই ক্ষেত্রে, আমরা ছায়াপথের অন্যত্র অন্যান্য অনেক রূপের জীবনের দেখা পেতে পারি, কিন্তু বুদ্ধিমান জীবন খুঁজে পাওয়া অসম্ভাব্য।

আরেকটি উপায়ে জীবনের বুদ্ধিমান পর্যায়ে উন্নীত হওয়া ব্যর্থ হতে পারে যদি কোনো গ্রহাণু বা ধুমকেতু গ্রহটির সাথে সংঘর্ষ করে। ১৯৯৪ সালে আমরা বৃহস্পতি গ্রহের সাথে একটি ধুমকেতু, ShoemakerLevy, এর সংঘর্ষ দেখেছিলাম। এটি অনেকগুলো বিশাল উল্কা সৃষ্টি করেছিলো। এটি ধারণা করা হয় যে পৃথিবী থেকে ৬৬ মিলিয়ন বছর আগে ডাইনোসরের বিলুপ্তির জন্য দায়ী ছিলো পৃথিবীর সাথে একটি ছোটখাট বস্তুর সংঘর্ষ। খুব অল্প সংখ্যক আদি স্তন্যপায়ী প্রাণী বেঁচে গিয়েছিলো, কিন্তু মানুষের মতো বড় কিছু অবশ্যই প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিলোএটি বলা কঠিন যে কতো ঘন ঘন এই ধরণের সংঘর্ষ হয়, কিন্তু একটি যুক্তিসঙ্গত অনুমান হতে পারে যে গড়ে মোটামুটি প্রতি বিশ মিলিয়ন বছরে। যদি এই সংখ্যা সঠিক হয়ে থাকে তবে এর অর্থ এই যে, পৃথিবীতে বুদ্ধিমান জীবন বিকশিত হয়েছে কেবল ভাগ্যবান সুযোগের জন্য যে গত ৬৬ মিলিয়ন বছরে বড় কোনো সংঘর্ষ ঘটে নি। ছায়াপথের অন্যান্য গ্রহগুলো, যেগুলোতে জীবনের বিকাশ ঘটেছে, সেগুলো সম্ভবত বুদ্ধিমান প্রাণের বিকাশের জন্য যথেষ্ট সংঘর্ষ-মুক্ত দীর্ঘ সময় পায় নি।

তৃতীয় আরেকটি সম্ভাবনা হচ্ছে যে জীবনের গঠন এবং বুদ্ধিমান জীবনের বিকাশের জন্য যুক্তিসঙ্গত সম্ভাবনা আছে, কিন্তু ব্যবস্থাটি অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে, এবং বুদ্ধিমান প্রাণ বা জীবন নিজেকে নিজে ধ্বংস করে ফেলে। এটি একটি নেতিবাচক উপসংহার হবে এবং আমি খুব আশা করি যে এটি সত্য নয়।

আমি চতুর্থ আরেকটি সম্ভাবনা পছন্দ করি: আরো বুদ্ধিমান জীবনের অনেক রূপ রয়েছে, কিন্তু আমাদের উপেক্ষা করেছে। ২০১৫ সালে আমি বৈপ্লবিক শ্রবণ উদ্যোগের (Breakthrough Listen Initiatives) সূচনায় জড়িত ছিলাম। বৈপ্লবিক শ্রবণ উদ্যোগ বুদ্ধিমান বহিরাগত জীবনের অনুসন্ধানের জন্য রেডিও পর্যবেক্ষণ ব্যবহার করে এবং এটির অত্যাধুনিক সুবিধাদি, উদার অর্থায়ন আছে এবং হাজার হাজার ঘণ্টার নিবেদিত রেডিও দূরবীন সময় ব্যবহার করে। এটি পৃথিবীর বাইরে সভ্যতার প্রমাণ খোঁজার লক্ষ্যে সবচেয়ে বড় বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রকল্প। বৈপ্লবিক বার্তা (Breakthrough Message) হচ্ছে একটি উন্নত সভ্যতা পড়তে পারবে এমন বার্তা তৈরির একটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা। কিন্তু আমাদের আরেকটু উন্নত হওয়ার আগে উত্তর দেওয়ার ক্ষেত্রে সর্তকতা অবলম্বন করা দরকার। আমাদের বর্তমান পর্যায়ে একটি আরো উন্নত সভ্যতার সাথে মিলিত হওয়া আমেরিকার আদি অধিবাসীদের কলম্বাসের সাথে মিলিত হওয়ার মতো হতে পারে- এবং আমি মনে করি না যে তারা মনে করেছিলো যে তারা সেটির জন্য প্রস্তুত ছিলো।

যদি বুদ্ধিমান প্রাণ পৃথিবীর বাইরে কোথাও বিদ্যমান থাকে, তবে সেটি কি আমাদের জানা রূপের অনুরূপ নাকি ভিন্ন হবে?

পৃথিবীতে বুদ্ধিমান প্রাণ আছে কি? কিন্তু মজা না করে, যদি অন্যত্র বুদ্ধিমান প্রাণ থেকে থাকে, তবে এটি অবশ্যই খুব দীর্ঘ পথ দূরে, অন্যথায় এটি এতোদিনে পৃথিবী পরিদর্শন করে ফেলতো। এবং আমি মনে করি যদি আমাদের পরিদর্শন করতো তবে আমরা জানতাম; এটি Independence Day চলচ্চিত্রের মতো হবে।

No comments:

Post a Comment

কী নিয়ে মাতামাতি...

13 Reasons Why (1) ADHD (1) Alzheimer's disease (1) Antibiotic Resistance (1) Anxiety (1) Autism (1) Brexit (1) Brief Answers to the Big Questions (10) Britain (1) Bruce Peninsula (1) Cades Cove Scenic Drive (1) Canada (2) Clingsman Dome (1) District 9 (1) Dopamine (1) Dyer's Bay (1) Federico Garcia Lorca (1) Fierté Montréal (2) Gaspé & Percé Rock (1) Global Warming (2) Great Smoky Mountains (2) Heatwave (1) Hemianopia (1) infographics (1) Instagram (104) International Balloon Festival (1) Interstate 77 (1) Lift (1) Links (1) Maple syrup boiling down (1) Maple syrup harvesting (1) Marconi Union (1) Mike Krath (1) Montmorency Falls (2) Montreal International Jazz Festival (1) Montreal Pride Parade (2) Mother Teresa (1) Movies (1) Music (2) Netflix (1) Niagara Falls (3) Nickelback (1) Nirvana (1) North Carolina (1) nutella (1) Photography (2) Photos (104) Poets of the Fall (2) Psychology (1) Rain storm in Montreal (1) Rape (1) Reading List (1) Saint-Remi (1) Samuel de Champlain Bridge (1) Sandra Crook (1) Schizophrenia (1) Sci-Fi (1) Sci-Hub (1) Shortest Sci-Fi (1) Smoky Mountains (1) Stephen Hawking (15) Sunshine 2007 (1) Tennessee (1) The Beatles (1) The Danish Girl (1) The Grand Design (8) The Handsome Family (1) Tobermory (1) Toronto (2) Transexualism (1) True Detective (1) Tyrannosaurus rex (1) Wallingford Back Mine – Mulgrave et Derry (1) West Island (1) Womenchapter (1) অটিজম (3) অটোয়া (1) অণুগল্প (7) অনুবাদ (17) অভিগীতি (12) অভিলিপি (9) অর্থনীতি (2) অ্যালকোহল (1) আইন ও বিচারব্যবস্থা (1) আইসিস (2) আচরণগত স্নায়ুবিজ্ঞান (1) আত্মহত্যা (2) আলঝেইমারের রোগ (3) আলোকচিত্র (6) আলোকবাজি (9) ইচ্ছেকথা (3) ইন্সটাগ্রাম (104) উইমেন-চ্যাপ্টার (1) উদ্বেগ (1) উবার (1) একুশে বইমেলা (1) এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধ (1) এম-তত্ত্ব (5) কবিতা (95) কম্পিউটার বিজ্ঞান (1) করোনাভাইরাস (6) কলাম (5) কানাডা (4) কাব্যালোচনা (2) কাসেম বিন আবুবাকার (1) কিশোরতোষ (1) কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (1) কৃষ্ণগহ্বর (1) কোভিড-১৯ (8) ক্যান্সার (1) ক্রসফায়ার (1) ক্লোনিং (1) খাদ্যব্যবস্থা (1) গণতন্ত্র (1) গবেষণা (1) গবেষণাপত্র (1) গর্ভপাত (1) গল্প (8) গাঁজা (1) গান (17) গুজব (1) গ্যাব্রিয়েলা মিস্ট্রাল (1) চলচ্চিত্র (4) ছড়া (5) ছবি (104) ছোটগল্প (5) জঙ্গিবাদ (1) জনস্বাস্থ্য (2) জিকা ভাইরাস (1) জীববিজ্ঞান (1) জীবাণু (1) ট্রান্সসেক্সুয়াল (1) ট্রান্সসেক্সুয়ালিজম (1) ডাইনোসর (1) ডাউনলোড (1) ডোপামিন (1) তাপমাত্রা (1) তিল-গপ্পো (17) তুষার দত্ত (2) তেজস্ক্রিয়তা চিকিৎসা (1) দূরবীন (2) দৃষ্টিশক্তি (1) ধর্ম (3) ধর্ষণ (2) নায়াগ্রা ফলস জলপ্রপাত (1) নারী (3) নারী স্বাধীনতা (1) নুটেলা (1) নৈতিকতা (1) পরিবেশ (1) পাঁচমিশালী (1) পাঠসূচি (1) পাম তেল (1) পাহাড় (1) পুস্তক (1) পেডোফিলিয়া (1) প্রকৃতি (1) প্রবন্ধ (2) প্রবাস (2) প্রাইমেট (1) ফটোগ্রাফী (1) ফেসবুক (1) ফ্রান্স (1) বই (2) বড় প্রশ্নের সংক্ষিপ্ত উত্তর (10) বয়ঃসন্ধি (1) বর্ণবাদ (1) বাঙলাদেশ (18) বাবা (1) বাংলাদেশ (1) বিজ্ঞপ্তি (1) বিজ্ঞান (13) বিটলস (1) বিষণ্নতা (3) বুরকিনি (1) বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি (7) বৈশ্বিক উষ্ণতা (1) ব্যক্তিত্ব (1) ব্যথা (1) ভাইটামিন ডি (1) ভাইরাস (1) ভালোবাসা (1) ভুয়া খবর (1) ভেন্টিলেটর (1) ভ্রমণ (3) মনস্তত্ত্ব (1) মনোবিজ্ঞান (19) মন্ট্রিয়াল (1) মন্ট্রিয়াল আন্তর্জাতিক জ্যাজ উৎসব (2) মস্তিষ্ক ক্যান্সার (1) মহিমান্বিত নকশা (3) মাদক (1) মাদকাসত্তি (2) মাদার তেরেসা (1) মানসিক স্বাস্থ্য (5) মুক্তগদ্য (3) মুক্তচিন্তা (3) মুক্তিযুদ্ধ (3) মৌলবাদ (1) যাপিত জীবন (2) যুগান্তর পত্রিকা (1) যৌনতা (1) রাজনীতি (1) রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প (3) রূপান্তরকাম (1) রৌদ্রস্নান (1) লিওনার্ড ম্লোডিনো (5) লিংক (2) লিঙ্গরূপান্তর (1) লিঙ্গরূপান্তরকারী (1) লিথিয়াম (1) লিফট (1) শিক্ষাব্যবস্থা (1) শিশুতোষ (3) সংগীত (3) সন্ত্রাসবাদ (1) সংবাদমাধ্যম (1) সময়ভ্রমণ (1) সমালোচনা (1) সর্দিগর্মি (1) সানশাইন (1) সামাজিক দূরত্ব (1) সাম্প্রতিক দেখা চলচ্চিত্র (1) সার্স-কোভ-২ ভাইরাস (4) সাহিত্য (4) স্কিৎসোফ্রেনিয়া (1) স্টিফেন হকিং (16) স্ট্রোক (1) স্নায়ুবিজ্ঞান (12) স্নায়ুবিষ (1) স্বাস্থ্যসেবা (1) হলুদ (1)
রোদের অসুখ © 2008 Por *Templates para Você*