১
দ্বিমেরুপ্রবণতা রোগের (bipolar disorder; এক ধরণের বিষণ্নতা রোগ) জন্য যেমন বিভিন্ন মনোবৈজ্ঞানিক চিকিৎসার (psychological therapy) পাশাপাশি নানাবিধ ওষুধ-ও পাওয়া যায় যা মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষের রসায়ন, স্নায়ুকোষদের যোগাযোগ ও সংযোগকে পরিবর্তন করে মনের উৎফুল্ল অবস্থা ফিরিয়ে আনতে চায়।
মনোবৈজ্ঞানিক চিকিৎসার একটি অন্যতম উপকারিতা হচ্ছে যে এটি রোগ বা বিষণ্নতায় আক্রান্ত ব্যক্তিকে তার বিষণ্নতায় কেনো ভুগছে সেটা উপলব্ধি করতে সাহায্য করে এবং চিকিৎসাকালীন অনেক ব্যক্তিগত সামাজিক আন্তর্সাম্পর্কিক কৌশল পন্থা খাপখাওয়ানোর উপায় শেখায় যা ব্যক্তি পরবর্তীতে যেকোনো পরিস্থিতি অথবা রোগের ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারে কমবেশি, অন্যদিকে ওষুধগুলোর কাজ হচ্ছে অনেকটা ধরো তক্তা মারো পেরেক টাইপের। দেখা যায় যে অনেক ক্ষেত্রে রোগ নির্ণয়ে ভুল থাকে, তাই ভিন্ন রোগের ওষুধ সেবন করেন রোগী; এবং এইসব ওষুধের অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে, অনেকক্ষেত্রে এইসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া জীবননাশক হতে পারে, যেমন মনোঅ্যামিন অক্সিডেইজ প্রতিবন্ধক (Monoamine oxidase inhibitors (MAOIs) হিসেবে বিষণ্নতার জন্য অনেকগুলো ওষুধ রয়েছে, কিন্তু এইসব ওষুধ নেয়ার সময়কালীন সময়ে কঠোরভাবে খাদ্যাভাস পরিবর্তন করে হয়, বেছে বেছে খাবার খেতে হয়, অ্যালকোহল ও ধুমপান করলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে, এবং ডোজের এদিকসেদিক হলে মৃত্যুর কবলে পড়তে পারেন রোগী। স্নায়ুবিজ্ঞানীদের গবেষণার ফলে নিত্যনতুন ওষুধ আসছে বাজারে, কিন্তু সমস্যা হচ্ছে একেকটি মানসিক রোগের কারণ, রোগের ক্রমবিকাশ, উপসর্গ ইত্যাদিতে ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে এতোবেশি পার্থক্য থাকে যে একই ওষুধ সবার ক্ষেত্রে কাজ করে না, এছাড়া এখনো অনেক মানসিক রোগের জৈবরসায়ন সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা নেই স্নায়ুবিজ্ঞানীদের। আধুনিককালে অন্যতম কিছু ওষুধ হচ্ছে সেরোটোনিন রিআপটেক প্রতিবন্ধক জাতীয় ওষুধ, এই ওষুধগুলো সেরোটোনিন নামক নিউরোট্রান্সমিটার স্নায়ুকোষের মধ্যকার যোগাযোগের পর স্নায়ুসন্ধিতে (দুটি স্নায়ুকোষের মধ্যকার সংযোগের মধ্যবর্তী অংশ) সেরোটোনিনের রিআপটেকে (পুনরায় তুলে নেয়া) বাঁধা দেয়, ফলে সেরোটোনিন স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি পরিমাণে (ও সময়ের জন্য) স্নায়ুসন্ধিতে থাকে, এবং ব্যক্তির মুডের পরিবর্তন আসে, তবে এইসব ওষুধের প্রভাব পেতে পেতে প্রায় দুই সপ্তাহ থেকে এক মাস লাগে। কাজ হোক আর না হোক এইসব ওষুধের বাজার কিন্তু বিশাল, যেমন শুধুমাত্র আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্রে বিষণ্নতা-বিরূদ্ধ (antidepressant) ওষুধের বাজার হচ্ছে প্রতিবছরে ৪ বিলিয়ন ডলার! ওষুধ কোম্পানিগুলোর লবিং, বিজ্ঞাপন, এবং সাধারণ রোগীদের অজ্ঞতা, ভুল ধারণাকে পুঁজি করে এই বাজার, যেমন, অনেক রোগী মনে করে যে ওষুধ খেলে সব ঠিক হয়ে যাবে! অথচ মনে রাখা দরকার যে মস্তিষ্ক বিশাল অঙ্গ, এখানে সঠিকভাবে না জেনে একটা ব্যাপার ঠিক করতে গেলে আরেকটা ব্যাপারে গণ্ডগোল দেখা দেয়, এছাড়া মনে রাখা দরকার যে মানসিক রোগের চিকিৎসা সবসময় শারীরিক রোগের মতো হবে এমন কোনো কথা নেই।
মনোবৈজ্ঞানিক চিকিৎসার একটি অন্যতম উপকারিতা হচ্ছে যে এটি রোগ বা বিষণ্নতায় আক্রান্ত ব্যক্তিকে তার বিষণ্নতায় কেনো ভুগছে সেটা উপলব্ধি করতে সাহায্য করে এবং চিকিৎসাকালীন অনেক ব্যক্তিগত সামাজিক আন্তর্সাম্পর্কিক কৌশল পন্থা খাপখাওয়ানোর উপায় শেখায় যা ব্যক্তি পরবর্তীতে যেকোনো পরিস্থিতি অথবা রোগের ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারে কমবেশি, অন্যদিকে ওষুধগুলোর কাজ হচ্ছে অনেকটা ধরো তক্তা মারো পেরেক টাইপের। দেখা যায় যে অনেক ক্ষেত্রে রোগ নির্ণয়ে ভুল থাকে, তাই ভিন্ন রোগের ওষুধ সেবন করেন রোগী; এবং এইসব ওষুধের অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে, অনেকক্ষেত্রে এইসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া জীবননাশক হতে পারে, যেমন মনোঅ্যামিন অক্সিডেইজ প্রতিবন্ধক (Monoamine oxidase inhibitors (MAOIs) হিসেবে বিষণ্নতার জন্য অনেকগুলো ওষুধ রয়েছে, কিন্তু এইসব ওষুধ নেয়ার সময়কালীন সময়ে কঠোরভাবে খাদ্যাভাস পরিবর্তন করে হয়, বেছে বেছে খাবার খেতে হয়, অ্যালকোহল ও ধুমপান করলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে, এবং ডোজের এদিকসেদিক হলে মৃত্যুর কবলে পড়তে পারেন রোগী। স্নায়ুবিজ্ঞানীদের গবেষণার ফলে নিত্যনতুন ওষুধ আসছে বাজারে, কিন্তু সমস্যা হচ্ছে একেকটি মানসিক রোগের কারণ, রোগের ক্রমবিকাশ, উপসর্গ ইত্যাদিতে ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে এতোবেশি পার্থক্য থাকে যে একই ওষুধ সবার ক্ষেত্রে কাজ করে না, এছাড়া এখনো অনেক মানসিক রোগের জৈবরসায়ন সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা নেই স্নায়ুবিজ্ঞানীদের। আধুনিককালে অন্যতম কিছু ওষুধ হচ্ছে সেরোটোনিন রিআপটেক প্রতিবন্ধক জাতীয় ওষুধ, এই ওষুধগুলো সেরোটোনিন নামক নিউরোট্রান্সমিটার স্নায়ুকোষের মধ্যকার যোগাযোগের পর স্নায়ুসন্ধিতে (দুটি স্নায়ুকোষের মধ্যকার সংযোগের মধ্যবর্তী অংশ) সেরোটোনিনের রিআপটেকে (পুনরায় তুলে নেয়া) বাঁধা দেয়, ফলে সেরোটোনিন স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি পরিমাণে (ও সময়ের জন্য) স্নায়ুসন্ধিতে থাকে, এবং ব্যক্তির মুডের পরিবর্তন আসে, তবে এইসব ওষুধের প্রভাব পেতে পেতে প্রায় দুই সপ্তাহ থেকে এক মাস লাগে। কাজ হোক আর না হোক এইসব ওষুধের বাজার কিন্তু বিশাল, যেমন শুধুমাত্র আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্রে বিষণ্নতা-বিরূদ্ধ (antidepressant) ওষুধের বাজার হচ্ছে প্রতিবছরে ৪ বিলিয়ন ডলার! ওষুধ কোম্পানিগুলোর লবিং, বিজ্ঞাপন, এবং সাধারণ রোগীদের অজ্ঞতা, ভুল ধারণাকে পুঁজি করে এই বাজার, যেমন, অনেক রোগী মনে করে যে ওষুধ খেলে সব ঠিক হয়ে যাবে! অথচ মনে রাখা দরকার যে মস্তিষ্ক বিশাল অঙ্গ, এখানে সঠিকভাবে না জেনে একটা ব্যাপার ঠিক করতে গেলে আরেকটা ব্যাপারে গণ্ডগোল দেখা দেয়, এছাড়া মনে রাখা দরকার যে মানসিক রোগের চিকিৎসা সবসময় শারীরিক রোগের মতো হবে এমন কোনো কথা নেই।
অন্যতম আরেকটি ওষুধ হচ্ছে লিথিয়াম (Lithium compounds/lithium salts/lithium citrate) । লিথিয়ামের একটা খারাপ ইতিহাস আছে, ১৯৬০ থেকে ১৯৮০ সালের দিকে অনেক মনোচিকিৎসক (psychiatrist) দেদারসে বিষণ্নতার জন্য লিথিয়াম দিয়েছিলেন, অথচ তখনো লিথিয়ামের সাইকোফার্মাকোলজি ও ফার্মাকোকিনেটিক্স সম্পর্কে ধারণা অতো বেশি ছিলো না, ফলে অনেক ওভারডোজ হয়েছে, ফলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া-ও বেশি রকমের, তাছাড়া লিথিয়াম যেহেতু পেটেন্ট করার যোগ্য নয়, এবং ওষুধ কোম্পানিগুলো দেখলো যে এতে তাদের ব্যবসা নেই তারা লিথিয়ামের বিরুদ্ধে “বিরূপ বিজ্ঞাপন”-ও প্রচার করেছেন। ফলে রোগী ও কিছু কিছু চিকিৎসকের মনে লিথিয়াম সম্পর্কে বিরূপ মনোভাব ছিলো/আছে। যাহোক, সাম্প্রতিককালে ব্রিটেনের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে অন্যান্য অনেক ওষুধের তুলনায় দ্বিমেরুপ্রবণতা রোগের ক্ষেত্রে লিথিয়াম কার্যকরী এবং অন্যান্য ওষুধের তুলনায় এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সহনশীল ও বেশ কম।
ব্রিটেনে প্রায় ৬.৫ লাখ লোক বিষণ্নতা-জাতীয় রোগে আক্রান্ত, ফলে ওষুধের বাজার-ও বিশাল। গবেষকরা ৬৬৭১ জন রোগীর উপর (সারা ব্রিটেন জুড়ে) ১৯৯৫ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত গবেষণা করে দেখেন যে অন্যান্য ওষুধের তুলনায় লিথিয়াম বিষণ্নতা-সংক্রান্ত আত্মহত্যা ও আত্ম-ক্ষতিকর আচরণকে কমিয়ে আনে। রোগীদের মধ্যে ২১৪৮ জন লিথিয়াম, ১৬৭০ জন valproate (VPA, valproic acid, sodium valproate), ১৪৭৭ জন olanzapine (Zyprexa নামে পরিচিত ছিলো, ডোপামিন এ্যান্টাগনিস্ট), এবং ১৩৭৬ জন quetiapine (Seroquel নামে পরিচিত; ডোপামিন, সেরোটোনিন, এড্রেনারজিক এ্যান্টগনিস্ট) ওষুধ সেবন করেছিলেন। সর্বোপরি সব ওষুধের রোগীরা কিডনি রোগ, থাইরয়েড রোগ, ওজন বেড়ে যাওয়া, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ভুগলে-ও দেখা গেলো যে অন্যান্য ওষুধগুলোর রোগীদের ১৫-২০% তাদের মূল ওজনের ১৫% বেশি ওজন বাড়লে-ও লিথিয়াম সেবনকারীদের ১০% রোগী এই অতিরিক্ত ওজন লাভ করেছিলেন। olanzapine এর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ওজন বেড়েছে, এবং সবচেয়ে বেশি উচ্চ রক্তচাপ।
এছাড়া আরেকটি গবেষণায় দেখা গেলো যে অন্যান্য ওষুধের (উপরে উল্লেখিত) ক্ষেত্রে রোগীরা লিথিয়ামের তুলনায় ৪০% আত্মহত্যা অথবা আত্মবিনাশী আচরণে লিপ্ত হয়, অর্থাৎ লিথিয়াম আত্মহত্যা ও আত্মবিনাশী আচরণের ঝুঁকি কমায়। উল্লেখ্য যে দ্বিমেরুপ্রবণতা রোগের ক্ষেত্রে ব্যক্তি অনেক বেশি আত্মহত্যাপ্রবণ হয়ে উঠেন, এমনকি স্কিটস্-প্রেনিয়া (schizophrenia) ও অ্যালকোহল এবং মাদক আসক্তি রোগের তুলনায়।
গবেষকরা সুপারিশ করলেন যে আমাদের উচিত লিথিয়াম সম্পর্কিত বিরূপ ধারণা নিয়ে পুনর্বিবেচনা করা এবং দ্বিমেরুপ্রবণতাসহ অন্যান্য বিষণ্নতা-জাতীয় রোগের ওষুধ হিসেবে লিথিয়ামের কার্যকরীতা সম্পর্কে আরো গবেষণা করা।
২
লিথিয়াম শিরোনামে আমার প্রিয় ব্যান্ড নির্ভাবনা (Nirvana) এর একটি গান আছে। যদিও বলা হয়ে থাকে (এবং নির্ভানার প্রধান গায়ক Kurt Cobain নিজে-ও বলেছেন) এটি আত্মহত্যাপ্রবণ এক ব্যক্তির বাঁচার শেষ উপায় হিসেবে ধর্মের দ্বারস্থ হওয়া নিয়ে তবে কেনো যেনো আমার মনে হয় এই গানটি একজন বিষণ্নতা-আক্রান্ত ব্যক্তিকে-ও ফুটিয়ে তোলে- একজন বিষণ্ন ব্যক্তির মানসিক অবস্থা, আত্মহত্যাপ্রবণতা, সংকোচ, উৎকণ্ঠা ইত্যাদিসহ ওষুধ সেবনের প্রতিক্রিয়া যেনো তুলে ধরা হয়েছে।
গানটির অনুবাদ:
আজ আমি বেজায় খুশি
আমার বন্ধুদের খুঁজে পেয়েছি… মাথার ভেতরে
আমি খুব কুৎসিত, তাতে ক্ষতি নেই, তুমি-ও ঠিক তাই
আমাদের আয়না ভেঙে ফেলেছি
রবিবার সকালই আমার প্রতিদিনের সাধনা
একটুও ভীত নই আমি
ধাঁধার মাঝে আলো জ্বালাও আমার
ঈশ্বরকে খুঁজে পেয়েছি যেহেতু
আমি খুব একা, তাতে ক্ষতি নেই, মাথা কামিয়ে ফেলেছি আমি
একটু-ও মন খারাপ নেই আমার
যা কিছু শুনেছি সব কিছুর জন্য আমিই হয়তো দায়ী
যদিও খুব একটা নিশ্চিত নই
আমি খুব উদ্দীপিত, তোমার সাথে দেখার তর সইছে না
কিন্তু একটু-ও পরোয়া করি না
আমি খুব কামুক এখন, তাতে ক্ষতি নেই
আমার ইচ্ছে ভালোই
বেশই লাগছে আমার – আমি এতো সহজে ভাঙবো না
তোমাকে মিস করি – আমি এতো সহজে ভাঙবো না
তোমাকে ভালোবাসি - আমি এতো সহজে ভাঙবো না
তোমাকে নাশ করেছি - আমি এতো সহজে ভাঙবো না
মূল গান:
"Lithium"I'm so happy because todayI've found my friendsThey're in my headI'm so ugly, but that's okay, 'cause so are youWe've broken our mirrorsSunday morning is everyday for all I careAnd I'm not scaredLight my candles in a daze'Cause I've found godHey, hey, heyI'm so lonely but that's okay I shaved my headAnd I'm not sadAnd just maybe I'm to blame for all I've heardBut I'm not sureI'm so excited, I can't wait to meet you thereBut I don't careI'm so horny but that's okayMy will is goodHey, hey, heyI like it, I'm not gonna crackI miss you, I'm not gonna crackI love you, I'm not gonna crackI killed you, I'm not gonna crackI like it, I'm not gonna crackI miss you, I'm not gonna crackI love you, I'm not gonna crackI killed you, I'm not gonna crack
No comments:
Post a Comment