১
যখন কোনো মাদক গ্রহণ করা হয় তখন মস্তিষ্কে ডোপামিন নিঃসৃত হয় এবং সুখকর চাঙ্গা অনুভূতির সৃষ্টি হয়। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে এই ডোপামিন নিঃসরণ মস্তিষ্ক ও শারীরিক কার্যক্রমের জন্য ভালো নয়, তাই বিভিন্ন শরীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় মাদককে বিপাক করে ফেলা হয়, ফলে ডোপামিনের নিঃসরণ ক্রমশ কমে স্বাভাবিক হয়ে আসে।
মাদক বিপাক হলে সেটি ও এর ভগ্নাংশ প্রস্রাবে, ঘামে ইত্যাদিতে পাওয়া যায়। কিন্তু সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য যে চুলে এইসব মাদক বা মাদকের বিপাকিত অংশ ৯০ দিন বা তিন মাস পর্যন্ত থেকে যেতে পারে, শুধুমাত্র এলএসডি ছাড়া (যা দিন তিনেক থাকে)। অর্থাৎ মাদক গ্রহণ করেছেন কিনা এটি যদি পরীক্ষা করা হয় গ্রহণের ৯০ দিনের মাঝে তবে তা ধরা পড়ার সম্ভাবনা প্রচুর।
২
বিভিন্ন রোগ নির্ণয়ের জন্য অনেক সময় প্রস্রাব পরীক্ষার প্রয়োজন হয়। কিন্তু আপনি যদি কোনো মাদক গ্রহণ করে থাকেন সেটির বিপাকীয় অংশ বা দ্রব্য প্রস্রাবে থেকে যেতে পারে। শরীর মাদককে ভেঙে ফেলে বিপাকীয় নানা প্রক্রিয়ায়। কিন্তু এর ফলে যে রাসায়নিক দ্রব্য কিংবা পদার্থের সৃষ্টি হয় তা আপনি মাদক গ্রহণ করেছেন কিনা তা নির্ণয়ে ব্যবহার করা যায়।
অধিকাংশ মাদক গ্রহণের ১-১২ দিন পরে প্রস্রাবে সেই মাদকের অস্তিত্ব পাওয়া না গেলে-ও গাঁজা বা গাঁজার উপাদান এক মাস পর্যন্ত থাকতে পারে। গাঁজার অন্যতম উপাদান THC চর্বি জাতীয় পদার্থে দ্রবীভূত, ফলে শরীরের চর্বিকোষে এটি অনেকদিন ধরে থেকে যায় এবং ধীরে ধীরে বিপাকীয় প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায়।
মাদক ত্যাগের ক্ষেত্রে-ও এটি মনে রাখা দরকার, যেহেতু মাদক গ্রহণ বন্ধ করা মানে এই না যে শরীরে আর মাদক নেই।
৩
বিভিন্ন মাদক গ্রহণের পরে সেই মাদক আপনার রক্তে অনেক ঘণ্টা ধরে বিরাজ করে পারে। যেমন, এলএসডি তিন ঘণ্টা থাকলে-ও গাঁজা প্রায় ৩৩৬ ঘণ্টা বা ১৪ দিন পর্যন্ত থাকতে পারে। অন্যদিকে, মদ বা অ্যালকোহল ১২ ঘণ্টা থাকতে পারে।
তাই যেসব কাজ মাদকের প্রভাবে প্রভাবিত হতে পারে, যেমন গাড়ি বিমান ইত্যাদি চালানো, জটিল চিন্তাভাবনা, হিসেবনিকেশ, সেগুলোতে অংশগ্রহণের আগে সতর্ক থাকতে হবে।
No comments:
Post a Comment