১
স্বাতী এসে জানালার পর্দা সরিয়ে দেয়। বাইরে দুটি চাঁদ ঝুলে আছে। আমরা এখন ঈশ্বর-ঈশ্বরী।
এদের তিনটি পা। পা-ও কি না ঠিক বলতে পারছি না। বুকের কাছটা থেকে একটি শুঁড়ের মতো আছে। মাথার পেছনে শিংঅলা পেঁচার মতো নিখুঁত চোখ। আমরা এসে স্বভাবসুলভ পর্যবেক্ষণে নেমেছিলাম, ওরা আগন্তুক পছন্দ করে না বলে ঝগড়া হলো। আমরা মেরেছি। ওরা আমাদের দেবতা কিংবা ঈশ্বর হিসেবে মেনে নিয়েছে।
আমরা আমাদের নিদর্শন স্বরূপ এই উপ-নভোযানকে অকেজো করে রেখে যাবো। ওরা উপাসনা করুক। মানুষ হিসেবে এককালে আমরা-ও অশরীরীর দাসত্ব করেছিলিম।
২
স্বাতী এসে পর্দা সরিয়ে দেয়। বাইরে অন্ধকার। আমরা এখন সামগ্রী।
এদের কোনো নির্দিষ্ট আকৃতি নেই। সমষ্টিগত বুদ্ধিমত্তা, আবার পৃথক পৃথক-ও। আজ চারদিন। আমাদের পর্যবেক্ষণ, বিশ্লেষণ করা হলো। আমরা ঝগড়া করি নি। অবশেষে তিনদিনের মাথায় আমাদের স্থান হলো প্রদর্শনী কেন্দ্রে। আমাদের আশেপাশে আরো বিভিন্ন মহাজাগতিক স্থান থেকে জড়ো করা হেনতেন আছে। এরা খারাপ না, শুধু বাচ্চাগুলো এসে আমাদের দিকে খাবার ছুঁড়ে দিয়ে হাসে। আহত নদীর জল কোলাহলের এই শব্দ হওয়াকে আমার হাসি মনে হতে থাকে।
আমরা সময়-ভ্রমণ করে নিজেদের এই বন্দিত্ব খুলতে পারি হয়তো। চেষ্টা করা যেতে পারে। ভবিষ্যতে গেলে ফেরা যাবে না। অতীত পাল্টালে বর্তমানে আসা যাবে না। আমরা সময়-ভ্রমণ করতে গিয়ে কেবল সমান্তরাল মহাবিশ্বে ঘুরপাক খেতে থাকি। পূর্বপুরুষদের দেশেই ফিরে যাওয়া যেতে পারে।
৩
স্বাতী এসে চশমা খুলে দেয়। বাইরে রঙ আর রঙ। এবং পূর্বপুরুষের একজনের নির্দেশ মতো গোলাম আজম ও সাঙ্গপাঙ্গদের আগেই ধ্বংস করে দিতে হবে। কিন্তু ভবিষ্যত পৃথিবী থেকে আসা আমাদের তথ্যভাণ্ডারে জলে তলিয়ে যাওয়া অবিখ্যাত দেশটার ইতিহাস, অবস্থান সম্পর্কে ভুল তথ্য দেয়া আছে। গোলাম আজম কিংবা তার সাঙ্গপাঙ্গদের কেউ আমাদের আগেই এসেছিলো হয়তো।
No comments:
Post a Comment